ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

প্রকল্পের নামে লাখ লাখ টাকা লুটপাটের অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৭:৫৬ এএম, ২৪ জানুয়ারি ২০১৬

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ৪০ দিনের কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পের ১ কোটি ৩ লাখ ৮৪ হাজার টাকার কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের কোনো স্থানেই এ কাজের দৃশ্যমান পরিলক্ষিত হচ্ছে না।

অভিযোগ উঠেছে, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা কাল্পনিক প্রকল্প সাজিয়ে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে অতি দরিদ্রদের জন্য ৪০ দিনের কর্মসংস্থান কর্মসূচির ১ম পর্যায়ের প্রকল্পের জন্য ১,২৯৮ জন উপকারভোগীর বিপরীতে ১ কোটি ৩ লাখ ৮৪ হাজার টাকা শ্রমিক মজুরি বাবদ বরাদ্দ আসে উপজেলা প্রকল্প অফিসে।

সে অনুয়ায়ী কালীগঞ্জের ১নং সুন্দরপুর-দুর্গাপুর ইউনিয়নে ৯৫ জনের বিপরীতে ৭ লাখ ৬০ হাজার, ২ নং জামাল ইউনিয়নে ১০৫ জনের বিপরীতে ৮ লাখ ৪০ হাজার, ৩ নং কোলা ইউনিয়নে ১৩৫ জনের বিপরীতে ১০ লাখ ৮০ হাজার, ৪ নং নিয়ামতপুর ইউনিয়নে ১১৩ জনের বিপরীতে ৯ লাখ ৪ হাজার, ৫ নং সিমলা-রোকনপুর ইউনিয়নে ৬৮ জনের বিপরীতে ৫ লাখ ৪৪ হাজার, ৬ নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নে ১৩২ জনের বিপরীতে ১০ লাখ ৫৬ হাজার, ৭ নং রায়গ্রাম ইউনিয়নে ১২৯ জনের বিপরীতে ১০ লাখ ৩২ হাজার, ৮ নং মালিয়াট ইউনিয়নে ১০৩ জনের বিপরীতে ৮ লাখ ২৪ হাজার, ৯ নং বারবাজার ইউনিয়নে ১৬৭ জনের বিপরীতে ১৩ লাখ ৩৬ হাজার, ১০ নং কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নে ১১৩ জনের বিপরীতে ৯ লাখ ৪ হাজার ও ১১ নং রাখালগাছি ইউনিয়নে ১৩৮ জনের বিপরীতে ১১ লাখ ৪ হাজার টাকাসহ মোট ১২৯৮ জনের বিপরীতে ১ কোটি ৩ লাখ ৮৪ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি ইউনিয়নে নির্দিষ্ট টাকা বরাদ্দের অনুকূলে প্রতি শনিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত নির্দিষ্ট সংখ্যক শ্রমিক কাজ করবে। একজন শ্রমিক প্রতিদিন ২০০ টাকা করে মজুরির ভিত্তিতে মাটি কাটা, খাল খনন, পুকুর ভরাট, রাস্তা সংস্কারের কাজ করবে। ৪০ দিনে একজন শ্রমিক পাবে ৮ হাজার টাকা। প্রতি বৃহস্পতিবার তারা বিল তুলে নিয়ে যাবে।

কিন্তু প্রকল্প অনুযায়ী কাষ্টভাঙ্গা, মালিয়াট, জামাল, রায়গ্রাম, নিয়ামতপুরসহ কোনো ইউনিয়নেই এসব কাজ হচ্ছে না। সরেজমিনে বেলাট দৌলতপুর নূরনবীর বাড়ি হতে সাদিকপুর সমলেমের বাড়ির পাকা রাস্তা পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার কাজের প্রকল্পে ২৯ জন শ্রমিকের কাজ করার কথা। কিন্তু সেখানে গিয়ে একজনকেও পাওয়া যায় নি।

লেবার সর্দার নওশের আলী জানান, আজ কোনো কাজ হয়নি। আর মেম্বার আবু বক্কর জানান, সবাই কাজ করে চলে গেছে। এ রকমই দৃশ্য দেখা গেছে অন্যান্য ইউপিতেও। মূলত কাজ না করে প্রকল্পের সভাপতি ও ইউপি সদস্যরা এসব লেবারদের বিল তুলে নিচ্ছে। দৃশ্যমান কোনো কাজ দেখা যাচ্ছে না।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন জানান, আমাদের প্রকল্প অনুযায়ীই কাজ হচ্ছে। হয়ত দু’একজন অনুপস্থিত থাকতে পারে।

অপরদিকে কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী মোর্তুজা লিটু জানান, সব জায়গাই কাজ হচ্ছে। শুধু ৬নং ওয়ার্ডে একটু সমস্যা আছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এইচ এম আশরাফুল আরেফিন জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। কেউ যদি কাজ না করে বিল দেয় তাহলে টাকা কেটে রাখা হবে। আর যদি মোটেই কাজ না করে তাহলে বিল দেয়া হবে না।

এসএস/এমএস