ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

নাচে আকৃষ্ট হয়ে শিশুকে ধর্ষণ, পরে ফ্যানে ঝুলিয়ে রাখে বখাটেরা

জেলা প্রতিনিধি | টাঙ্গাইল | প্রকাশিত: ০৮:১৪ পিএম, ০৬ জুন ২০২২

টাঙ্গাইলের বাসাইলে তিশা আক্তার নামের এক শিশুকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে তিন বখাটেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। অভিযান চালিয়ে বাসাইল উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

সোমবার (৬ জুন) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান টাঙ্গাইল পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার সিরাজ আমিন।

গ্রেফতাররা হলেন বাসাইল উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের স্বপন মন্ডলের ছেলে গোবিন্দ মন্ডল (১৯), আনন্দ মন্ডলের ছেলে চঞ্চল চন্দ্র মন্ডল (১৭) ও লালিত সরকারের ছেলে বিজয় সরকার (১৬)।

পুলিশ সুপার সিরাজ আমিন জানান, টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের আবু ভূইয়ার মেয়ে তিশা আক্তার। বয়স আট বছর। সে স্থানীয় একটি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ালেখা করতো। নাচে খুব পারদর্শী ছিল শিশু তিশা। স্থানীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নাচের জন্য তার ডাক আসতো। তার নাচ দেখে প্রতিবেশী গোবিন্দ মন্ডল, চঞ্চল চন্দ্র মন্ডল ও বিজয় সরকার আকৃষ্ট হয়।

বিকৃত যৌন লালসা চরিতার্থে তারা তিশাকে বিভিন্ন সময় নানা কায়দায় উত্ত্যক্ত করতেন। দুই মাস আগে তিশা আক্তার তার মা শম্পা বেগমের কাছে বিষয়টি খুলে বলে। কিন্তু অভিযুক্তরা বখাটে ও স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় শম্পা বেগম তাদের কিছু বলেননি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, বখাটেরা তিশার মায়ের গতিবিধি অনুসরণ করতেন। এক পর্যায়ে তারা জানতে পারেন তিশাকে বাড়িতে একা রেখে তার মা স্কুল ছুটির পর ছেলে শুভকে আনতে গেছেন।

গত ২৬ মে সকালে ছেলে শুভকে নিয়ে তার মা পাশের শহীদ ক্যাডেট একাডেমিতে নিয়ে গেলে অভিযুক্তরা তিশার ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। পরে তারা পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তার মায়ের ওড়না পেঁচিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। তার মা বাড়িতে এসে তিশাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করেন।

পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে বাসাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয় শিশু তিশাকে।

পুলিশ সুপার আরও জানান, তিশাকে বহন করা অ্যাম্বুলেন্স গাজীপুর পর্যন্ত গিয়ে নষ্ট হলে তাকে সাভার এনাম মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৯ মে শিশুটি মারা যায়।

ওই দিনই বাসাইল থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলার পর মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়। শনিবার (৪ জুন) ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়। পরে ওইদিনই তিশার বাবা আবু ভূইয়া বাসাইল থানায় ধর্ষণ মামলা করেন।

পুলিশ সুপার সিরাজ আমিন বলেন, আসামিরা স্বেচ্ছায় নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। জবানবন্দি না দিলে মামলা তদন্তের স্বার্থে আদালতের রিমান্ড আবেদন করা হবে।

আরিফ উর রহমান টগর/এসআর/এমএস