মেয়েকে ইভটিজিংয়ের অভিযোগে শিশুকে গাছে বেঁধে নির্যাতন
পাবনার আটঘরিয়ায় সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রকে গাছে বেঁধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত কামাল হোসেন ভুঁইয়াকে মঙ্গলবার (১০ মে) সন্ধ্যায় গ্রেফতার করেছে আটঘরিয়া থানা পুলিশ।
সোমবার (৯ মে) বিকেলে আটঘরিয়া পৌরসভার বিশ্রামপুর মহল্লায় নির্যাতনের ওই ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার ওই শিশুর বিরুদ্ধে অভিযোগ সে দশম শ্রেণি পড়ুয়া এক ছাত্রীকে ইভটিজিং করেছিল।
থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, নির্যাতনের শিকার ওই শিশু আটঘরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র। আটঘরিয়া উপজেলার বিশ্রামপুর মহল্লার কামাল হোসেন ভুঁইয়া নামের এক ব্যক্তির মেয়ে ওই একই স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ে। তিনি ওই শিশুর বিরুদ্ধে তার মেয়েকে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ করে তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান। এরপর নিজের বাড়িতে নিয়ে গাছে বেঁধে নির্যাতন করেন। পরে এলাকাবাসী শিশুটিকে উদ্ধার করে আটঘরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
শিশুটি বুধবার (১১ মে) সকালে জাগো নিউজকে জানায়, তাকে কামাল হোসেন ভুঁইয়া কৌশলে একজনকে দিয়ে একটি দোকানে নিয়ে যান। এরপর তাকে জোর করে ধরে বাড়ি নিয়ে গিয়ে গাছের সঙ্গে বাঁধেন। এরপর ওই ছাত্রী তাকে জুতা দিয়ে আর তার বাবা ও পরিবারের অন্যরা লাঠি দিয়ে পেটান ও কিল ঘুষি মারেন। তকে গলাও চেপে ধরা হয় বলে জানায় সে।
সে জানায়, তার বিরুদ্ধে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ করা হয়। কিন্তু তা সত্যি নয়।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে আটঘরিয়া থানায় শিশু নির্যাতন দমন আইনে ৪ জনকে আসামি করে মামলা করেন শিশুটির মা। এছাড়া স্থানীয়রা ঘটনাটি ছবি তুলে ফেসবুকে প্রকাশ করেন। এতে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে কামাল হোসেন ভুঁইয়াকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার করে।
নির্যাতনের শিকার ওই শিশুর মা বলেন, আমার ছেলেকে যে নির্যাতন করা হয়েছে তার বিচার চাই।
আটঘরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, শিশুটি হাসপাতালে ভর্তি ছিল। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এখন সে ভালো আছে। তাকে মঙ্গলবার বিকেলে রিলিজ দেওয়া হয়েছে।
আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় মঙ্গলবার থানায় শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা করেছেন শিশুটির মা। মামলার প্রধান আসামি কামাল হোসেন ভুঁইয়াকে গ্রেফতার করে হাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
আমিন ইসলাম জুয়েল/এফএ/জেআইএম