ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

জীর্ণ সেতুটি যেন মৃত্যুফাঁদ

নূর মোহাম্মদ | কিশোরগঞ্জ | প্রকাশিত: ১১:৪৩ এএম, ০৫ মে ২০২২

পাহাড়সম উচ্চতায় প্রায় একশ মিটার দীর্ঘ সেতুর মাঝখানে দাঁড়িয়ে একহাতে লাল গামছা উড়িয়ে যানবাহন থামার সংকেত দিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দা আছির উদ্দিন। অন্য হাতে সবুজ গামছা নেড়ে দেওয়া হচ্ছে সেতুতে ওঠার সংকেত। তার নির্দেশনা বেশিরভাগ যানবাহন মানলেও মানতে চাচ্ছে না ইটবাহী ট্রাক্টর।

কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা নিকলীতে নরসুন্দা নদীর ওপর জরাজীর্ণ এই সেতু দিয়ে চলছে হাজার হাজার যানবাহন। সেতুর পাটতন, দুই পাশের র্যালিং ভেঙে পড়েছে, আস্তরণ খসে বেরিয়ে পড়েছে পিলারের রড। নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও এ সেতুর ওপর দিয়ে চলছে মালবাহী ট্রাক। এতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা।

জীর্ণ সেতুটি যেন মৃত্যুফাঁদ

নিকলী উপজেলা সদরের সঙ্গে মহরকোনা, দামপাড়া ও কামালপুর সংযোগ সেতুটির দুই পাশের র্যালিং ভেঙে পড়েছে। পাটাতনের স্থানে স্থানে গর্ত। পলেস্তারা খসে বেরিয়ে পড়েছে পিলারের ভেতরের রড। ফাটল দেখা দিয়েছে অ্যাবাটমেন্ট ওয়ালে। ধসে পড়তে পারে যেকোনো সময়। এর ওপর দিয়েই চলছে হাজার হাজার যানবাহন।

জীর্ণ সেতুটি যেন মৃত্যুফাঁদ

সেতুটির ওপর দিয়ে প্রতিদিন পারাপার হচ্ছেন নিকলী, দামপাড়া, সিংপুরসহ চারটি ইউনিয়নের হাজার মানুষ। খাড়া সেতুতে উঠতে গিয়ে রিকশা ও অটোরিকশা উল্টে মাঝেমধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। পঙ্গু হচ্ছেন অনেকে। ঘটছে প্রাণহানিও।

এলাকাবাসী জানান, ভারী যানবাহনের চলাচল নিষেধ করা হলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছে মালবাহী ট্রাকসহ ছোট ছোট যানবাহন। নিচ দিয়ে চলেছে হাজার হাজার নৌযান। যে কোনো সময় এ সেতুটি ভেঙে পড়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সেতুটি ভেঙে এখানে একটি নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানান এলাকাবাসী।

জীর্ণ সেতুটি যেন মৃত্যুফাঁদ

জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে ৯৫ মিটার দীর্ঘ ও মাত্র দেড় মিটার প্রস্থের এই ফুট ওভারব্রিজটি নির্মাণ করে এলজিইডি। শুধুমাত্র হেঁটে চলাচলের জন্য এ সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। পরে মানুষের প্রয়োজনে এটির ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।

দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানালেন উপজেলা প্রশাসনের এই শীর্ষ কর্মকর্তা। মানুষকে সচেতন করতে বিজ্রের পাশে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

জীর্ণ সেতুটি যেন মৃত্যুফাঁদ

নিকলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আহসান মো. রুহুল কুদ্দুস ভূইয়া জানান, সেতুটি এখন মরণ ফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা মানুষকে এ সেতুর ওপর দিয়ে সাবধানে চলাচল করতে উদ্বুদ্ধ করছি। সেতুর দুই পাশে সতর্কিকরণ সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। তাছাড়া ব্যক্তিগত উদ্যোগে একজন লোক সেতুর মাঝখানে রাখা হয়। তিনি দুই পাশের যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করেন।

এখানে একটি নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আরও জানান, স্থানীয় এমপির সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি এ সেতুটি ভেঙে প্রায় একশ মিটার সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে। মাটি পরীক্ষা করা হচ্ছে। আশা করি শিগগিরই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

এফএ/জেআইএম