স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে পেটানো সেই ওসির তদন্ত শুরু
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগে থানা পুলিশের ওসি মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।
রোববার সকালে পুলিশ সুপারের নির্দেশে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন গৌরনদী সার্কেল এএসপি নাঈমুর রহমান। সকালে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আসাদুজ্জামান বাদলের (৪৫) কাছে ঘটনার বিবরণ শুনেন। এরপর ঘটনাস্থল আগৈলঝাড়ার দক্ষিণ শিহিপাশা গ্রামের সিরুর দোকান এলাকা পরিদর্শন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেন এএসপি নাঈমুর রহমান।
গৌরনদী সার্কেল এএসপি নাঈমুর রহমান জানান, পুলিশ সুপারের নির্দেশে বিষয়টি প্রাথমিকভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ নিয়ে কিছু বলা সমীচীন হবেনা। অভিযোগ ওঠায় ইতোমধ্যে পুলিশের এক কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এরই মধ্যে পিকআপ চালক কনস্টেবল মোকলেছুর রহমানকে আগৈলঝাড়া থানা থেকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে, রোববার দুপুরে স্থানীয় সংসদ সদস্যের বাড়ি যাবার পথে সেরাল এলাকায় বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে ওসি মনিরুল ইসলাম লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাদলের চাচা জুলফিকার আলী জানান, ঘটনার পরপরই বাদলের চিকিৎসার সকল দায়িত্ব নিয়েছেন স্থানীয় এমপি ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুলাহ।
বাদলের চাচাতো ভাই মো. লাবু জানান, উপজেলার পতিহার এলাকায় তার বাড়ির পাশে একটি দোকানে বসা ছিলেন আসাদুজ্জামান বাদল। এসময় পিকআপে করে রাস্তা দিয়ে ফোর্স নিয়ে যাচ্ছিলেন থানা পুলিশের ওসি মনিরুল ইসলাম। কয়েকটি গাছ রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে পিকআপ থামিয়ে তার কাছে বিষয়টি জানতে চান ওসি।
এ সময় আসাদুজ্জামান বাদল এগিয়ে এসে তার কাটা গাছ বলে উত্তর দেন। এ কথা বলার পরপরই মারধর শুরু করেন ওসি ও পিকআপের চালক কনস্টেবল মোকলেস। এসময় বাদল বলেন, তিনি সেরাল উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। রাস্তা ঘাটে অপমান না করতে ওসিকে অনুরোধ করেন। এতে আরো উল্টো কাজ হয়। পেটানোর মাত্রা আরো বেড়ে যায়। স্থানীয়রা ঘটনাটি দেখে এগিয়ে এলে বাদলকে শাসিয়ে চলে যান ওসি।
আহত বাদল স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাতকে বিষয়টি জানাতে তার বাসায় যান। বাসায় ঢুকার আগেই সেখানে অবস্থান করা ওসির সঙ্গে দেখা হয়ে যায় বাদলের। ওসি তার বিরুদ্ধে নালিশের বিষয়টি বুঝতে পেরে আবারো মারধর শুরু করেন বাদলকে। পেটানোর কারণে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যান বাদল। পুলিশ চলে গেলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে স্বজনদের খবর দেয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে গৌরনদীর আশোকাঠি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পুলিশের নির্যাতনের কারণে তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। এক চোখের অবস্থা আরো খারাপ। পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
সাইফ আমীন/এআরএ/পিআর