ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

সেমাই না দিলে ‘কারখানা বন্ধের হুমকি’ স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের

জেলা প্রতিনিধি | জয়পুরহাট | প্রকাশিত: ১০:৫৭ এএম, ১০ এপ্রিল ২০২২

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ওবাইদুল ইসলাম নামের শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যবসায়ীর কাছ থেকে উপঢৌকন নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর সামছুন্নাহারের বিরুদ্ধে। উপঢৌকন না পেলে তিনি কারখানা বন্ধেরও হুমকি দেন বলে জানা গেছে।

এ নিয়ে শনিবার (৯ এপ্রিল) সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাধেশ্যাম আগরওয়ালার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওবাইদুল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়নের কাঁঠালবাড়ি মোড়ে বাঁধন বেকারি ও ফয়সাল লাচ্ছা সেমাই নামে শারীরিক প্রতিবন্ধী ওবাইদুল ইসলামের একটি কারখানা রয়েছে। বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এবং জমি বিক্রি করে কারখানাটি গড়েন তিনি। প্রতি বছর রমজান ও ঈদকে কেন্দ্র করে নিজে এবং কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে সেমাই তৈরি করেন।

সেই কারখানায় গিয়ে বিভিন্ন সময় সেমাই উপঢৌকন নিতেন উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর সামছুন্নাহার। সম্প্রতি উপঢৌকন না পেয়ে কারখানা অপরিচ্ছন্ন, খাবারে রঙ মিশানোর কথা বলে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি।

ওবাইদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরেই দিনে ও রাতে আমাকে বিরক্ত করেন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর। পুলিশ নিয়ে এসে হুমকি দেন। কী সমস্যা? তা জানতে চাইলেও বলেন না। আমি প্রতিবন্ধী মানুষ, ব্যবসা করে খাই। গত দুই বছর আগে আমার কাছ থেকে দুই খাঁচা (৪৪ কেজি) সেমাই নিয়ে গেছেন। গত কয়েক দিন আগেও আমার কাছ থেকে এক খাঁচা লাচ্ছা সেমাই চেয়েছেন। আমি কয়েকদিন পরে দিতে চেয়েছি। এ বছর সেমাই না দেওয়ায় তিনি এসে আমাকে কাজ করতে না দেওয়াসহ কারখানা বন্ধের হুমকি দেন।’

ওবাইদুলের স্ত্রী শিল্পী কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কী করে খাবো? আমাদের দুটি বাচ্চা আছে। উনি (স্যানিটারি ইন্সপেক্টর) প্রতিবারই এসে আমাদের হুমকি দিয়ে যান আর সেমাই নিয়ে যায়। আমরা ভয়ে তাকে সেমাই দিয়ে দেই।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, ‘স্যানিটারি ইন্সপেক্ট সামছুন্নাহারের স্বামীর ও বাবাবাড়ি এ উপজেলায় হওয়াই তিনি প্রভাব খাটিয়ে এমন কার্যকলাপ পরিচালনা করেন।’

উপঢৌকন কিংবা চাঁদা গ্রহণ সবকিছু মিথ্যা দাবি করে উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্ট সামছুন্নাহার বলে, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। ওই কারখানায় পরিদর্শনে গিয়ে দেখি তারা সেমাইয়ে কৃত্রিম রঙ মেশাচ্ছে, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে সেমাই তৈরি এবং শ্রমিকদের অপরিচ্ছন্নতা রয়েছে। বিষয়গুলো নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বললে তারা খারাপ আচরণ করে।’

আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাধেশ্যাম আগরওয়ালা জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি এরআগেও তার অনেক অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। তাকে সাবধান করা হয়েছিল। এ বিষয়ে আমি নিজে ওই প্রতিবন্ধী ওবাইদুলের কারখানা পরিদর্শন করেছি। উপঢৌকন নেওয়ার বিষয়ে কারখানা মালিকের স্ত্রী শিল্পি বলেছেন। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’

এ বিষয়ে আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম হাবিবুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘তার অনিয়মের বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

রাশেদুজ্জামান/এসজে/এমএস