৮০ ভাগ পাকলেই ধান কাটার পরামর্শ হাওরে
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কিশোরগঞ্জের হাওরে তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকার বোরো ধান। বিভিন্ন নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে ধানের জমি। জেলার ইটনার পর এবার নিকলী উপজেলায় প্লাবিত হচ্ছে কাঁচা-পাকা ধানের জমি। ৮০ ভাগ ধান পাকলেই দ্রুত কেটে ফেলতে পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি অফিস।
তবে চরাঞ্চল ছাড়া এখনও প্রধান প্রধান হাওর সুরক্ষিত রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ফসলরক্ষা বাঁধের সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কবস্থায় রয়েছে প্রশাসন।
বুধবার সকালে নিকলী উপজেলার সিংপুর এলাকার কুনকুনিয়ার হাওরে গিয়ে দেখা গেছে, ধনু নদী তীরবর্তী চরের অনেক বোরো জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। উজানের ঢলে নদীর পানি বেড়ে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। নৌকা নিয়ে পানির নিচ থেকে আধাপাকা ধান কাটছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, ভারতের আসামের চেরাপুঞ্জিতে অতিরিক্ত বৃষ্টি হওয়ায় পাহাড়ি ঢলে হঠাৎ করেই দেশের নদীর পানি বাড়তে থাকে। সুনামগঞ্জ হয়ে গত শনিবার থেকে প্রবল বেগে পানি ঢুকতে থাকে কিশোরগঞ্জের ইটনার ধনু নদী তীরবর্তী নিচু জমিতে। গত দুদিনে পানি আরও বেড়ে নতুন করে প্লাবিত হয় নিকলী উপজেলার কয়েকটি চরাঞ্চলের জমি।
ইটনার জিওলের বাঁধসহ বেশকিছু বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। এগুলো মেরামতে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ স্থানীয় কৃষকরা।
কৃষকদের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড ফসলরক্ষা বাঁধগুলো সময় মতো মেরামত না করায় এগুলো ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। এগুলো দ্রুত সংস্কার না করা হলে বিভিন্ন হাওরে দ্রুত পানি ঢুকে পড়বে।
এদিকে হাওরের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার জরুরি সভা করেছে জেলা প্রশাসন। এতে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ মেরামতের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
গত এক সপ্তাহে জেলার ইটনা ও নিকলীর নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলে প্রায় ৭শ একর ধান পানিতে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সাইফুল আলম।
তিনি জানান, এখনও ফসলরক্ষা বাঁধের ভেতর পানি প্রবেশ করেনি। নদী তীরবর্তী নিচু এলাকার ধান ডুবেছে। তবে ৮০ ভাগ ধান পাকলেই দ্রুত কেটে ফেলতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জে চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।
নূর মোহাম্মদ/এফএ/জেআইএম