‘মেন্দা’ ভাতে জিভে জল
‘মেন্দা’ কলাপাতায় পরিবেশন করা একটি বিশেষ খাবার। এটাকে কেউ ‘পিঠালি’, কেউ ‘মিল্লি’ বলে থাকেন। গরুর মাংস-আতপ চালের গুঁড়া সঙ্গে নানা রকম মশলা দিয়ে রান্না করা হয় বিশেষ এ খাবারটি।
বহুকাল থেকে জামালপুরে বিয়ে, চল্লিশা, মৃত্যুবার্ষিকী, সুন্নাতে খৎনা, দোয়া মাহফিলসহ যে কোনো অনুষ্ঠানে কলাপাতায় খাবারটি পরিবেশন করা হয়। তবে, কলাপাতার অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে প্লেটেও খাবারটি পরিবেশন করা হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, জেলার সবকটি উপজেলায় মেন্দা ভাতের প্রচলন রয়েছে। বিশেষ করে মাদারগঞ্জ, সরিষাবাড়ী, পাশের টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ি ও সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার কয়েকটি গ্রামে এর প্রচলন বেশি। বিশেষ এ খাবারটি রান্নায় অভিজ্ঞ বাবুর্চির প্রয়োজন হয়।
মেন্দার উৎসবটি কখনও মিলনমেলা কখনও আবার বেদনার বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। পূর্বপুরুষ থেকে এটি দেখা গেলেও ঠিক কবে এর প্রচলন শুরু হয় তা কেউ বলতে পারে না। যে কোনো অনুষ্ঠানে মেন্দা ছাড়া পরিপূর্ণতা পায় না। ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার লোকজন আসে ঐতিহ্যবাহী এ খাবারটি খেতে। কেউ কেউ এটি মাটির হাঁড়িতে করে নিয়ে যান স্বজনদের জন্য। এটি স্থানীয় কিছু রেস্তোরাঁতেও পাওয়া যায়।
স্থানীয় রুবেল, পলাশ, নয়ন, আনোয়ার, মিজানুর রহমান ও রনি মাহমুদ জানান, প্রাচীন এ রন্ধন প্রণালী ঐতিহ্যের বৈচিত্র্য বহন করলেও বর্তমানে এটি বিলুপ্তির পথে। সবার প্রচেষ্টায় ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মাঝে টিকে থাকবে এমন প্রত্যাশাও করেন সবাই।
দৌলতুজ্জামান নামের স্থানীয় এক বাবুর্চি জাগো নিউজকে বলেন, সব ধরনের মাংস দিয়েই এটি রান্না করা যায়। তবে গরুর মাংস দিয়ে সবচেয়ে ভালো হয়।
জামালপুর সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, এটি জামালপুরের ঐতিহ্যবাহী একটি খাবার। এ খাবারের প্রচলন ঠিক কবে থেকে শুরু হয়েছে সেটি জানি না। তবে এ খাবার কলাপাতায় না হলে ঠিক জমে না। মেন্দার নাম শুনলেই জিভে জল এসে যায়।
মো. নাসিম উদ্দিন/আরএইচ/জেআইএম