মতিয়া চৌধুরীকে আওয়ামী লীগার হতে বললেন বাদশা
এবার আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, শেরপুর-২ (নালিতাবাড়ী-নকলা) আসনের সংসদ সদস্য, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীকে ‘আওয়ামী লীগার’ হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা।
কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা বুধবার শেরপুরের সাংবাদিকদের কাছে প্রেরিত এক লিখিত বিবৃতিতে এ অনুরোধ জানিয়েছেন।
বাদশা গত সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-২ আসন থেকে মতিয়া চৌধুরীর বিপক্ষে বিদ্রোহী হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ উপজেলা চেয়ারম্যান ফোরামের সাবেক মহাসচিব বাদশা ওই বিবৃতিতে দাবি করেন, মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ করা নেতা-কর্মীদের আন্তরিকভাবে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে মনস্তাত্বিক প্রতিবন্ধকতায় ভোগেন। ন্যাপ ও বাম ঘরানার লোকদের নিয়ে কাজ করতে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তার অসহিষ্ণু আচরণের শিকার হয়ে শেরপুরের অনেক আওয়ামী লীগ নেতা দুঃখ-বেদনা নিয়ে পরপারে গত হয়েছেন। এমন নেতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সাবেক এমএলএ মরহুম নিজাম উদ্দিন আহমেদ, সাবেক গভর্নর মরহুম অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, সাবেক পৌরপতি মরহুম অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ, সাবেক এমএলএ মরহুম ডা. নাদেরুজ্জামান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মরহুম অধ্যক্ষ আবু তাহের।
বিবৃতিতে দাবি করা হয়, মতিয়া চৌধুরীর ইচ্ছা-অনিচ্ছার মূল্য দিতে ব্যর্থ হয়ে সক্রিয় রাজনীতি করতে পারছেন না নকলার সাবেক এমপি অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, সাবেক পৌরপতি অধ্যাপক মিজানুর রহমান, নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, সাবেক পৌর মেয়র আব্দুল হালিম উকিল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোখলেসুর রহমান লেবু ও সাবেক এমএলএ আব্দুল হাকিম সরকারের পুত্র আওয়ামী লীগ নেতা সরকার গোলাম ফারুকসহ অনেক ত্যাগী নেতা-কর্মী।
মতিয়া চৌধুরী নালিতাবাড়ী ও নকলা উপজেলায় দীর্ঘদিন যাবত ছাত্রলীগের কোনো কমিটি করতে দিচ্ছেন না অভিযোগ করে বাদশা বলেন, এতে বর্তমান নেতৃত্ব যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনিভাবে ভবিষ্যত নেতৃত্ব সৃষ্টির সকল রাস্তা রুদ্ধ করে রেখেছেন।
বদিউজ্জামান বাদশা বলেন, মতিয়া চৌধুরী নকলা-নালিতাবাড়ীতে আসার আগেই তিনি (বাদশা) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের (মান্নান-নানক) সহ-সভাপতি ছিলেন। কিন্তু এরপর রাজনৈতিক ক্ষেত্রে পদে পদে বাধাগ্রস্তও হয়েছেন ছাত্রলীগের প্রতি তার নেতিবাচক মনোভাবের কারণে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তাদের প্রতি সদয় না হলে রাজনৈতিক অঙ্গনে টিকে থাকাই দুরূহ ছিল।
সাম্প্রতিক পৌর নির্বাচনে শেরপুর সদর পৌরসভায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটনের প্রতি অসহযোগিতামূলক আচরণ সকলকে হতাশ করেছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুইপ আতিউর রহমান আতিক এমপি, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল পিপি ও নবনির্বাচিত পৌর মেয়র লিটনসহ জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার কারণে এখন রুখে দাঁড়িয়েছেন। এটি ছিল সময়ের দাবি।
জেলা আওয়ামী লীগসহ সকলেই মতিয়া চৌধুরীর ওই বিমাতাসূলভ আচরণের অবসান চায়। তাই মতিয়া চৌধুরীর প্রতি বাদশার অনুরোধ, আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের প্রতি অসহিষ্ণু আচরণ ছেড়ে দিয়ে মনস্তাত্বিক বাধা দূর করে আওয়ামী পরিবারের সঙ্গে একাত্ব হয়ে আওয়ামী লীগার হওয়ার চেষ্টা করুন।
হাকিম বাবুল/এমএএস/আরআইপি