ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

না.গঞ্জে রাজউকের জমি অধিগ্রহণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ০৯:৪১ এএম, ১৩ জানুয়ারি ২০১৬

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার জালকুড়ি এলাকায় রাজউক কর্তৃক ৫০০ বিঘা জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।

বুধবার দুপুরে জালকুড়ি ভূমি রক্ষা কমিটির ব্যানারে কয়েকশত অধিবাসী ব্যানার প্ল্যাকার্ড সহকারে বিক্ষোভ মিছিল বের করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সমবেত হয়ে মানববন্ধন করে। এরপর তারা জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমান মিঞার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জালকুড়ি ভূমি রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক বদিউজ্জামান বদু, যুগ্ম আহ্বায়ক সামছুল আলম বাচ্চু, শাহজাদা দেওয়ান, আলাউদ্দিন প্রধান, লোকমান হোসেন, সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন, ফাহিম আহমেদ রাজ, হাজী মনছুর আহাম্মেদ, হাজী জসিমউদ্দিন, মোকলেছুর রহমান প্রমুখ।

স্মারকলিপিতে বক্তারা বলেন, খান সাহেব ওসমান আলী জাতীয় স্টেডিয়ামের পূর্ব পাশে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৯নং ওয়ার্ডের জালকুড়ি এলাকায় রাজউকের আবাসন প্রকল্পের জন্য ৫০০ বিঘা জায়গা অধিগ্রহণ ও প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই এলাকায় ৫শ বিঘার বেশি জমি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। সেখানে কোনো ফসল হয় না আবার কোনো ঘরবাড়িও নেই। সেই চিঠি পাওয়ার পর গত বছরের ২৪ আগস্ট গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য রাজউকের চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। যা সম্প্রতি একটি স্থানীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে।

কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ওই ৫০০ বিঘা জমি অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে এবং সেখানে কোনো ঘর বাড়ি নেই ও ফসল হয় না এই কথাটি সত্য নয়। ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই খাদ্য শস্যসহ মৌসুমী ফসল উৎপন্ন হয়ে আসছিল। কিন্তু বর্তমানে ওই ৫০০ বিঘা জমি এলাকার পানি নিস্কাশনের খালটি খনন না করার ফলে কিছু জায়গা সারা বছর পানির মধ্যে তলিয়ে থাকে। ওই ৫০০ বিঘা জমির অনেকাংশে হাজার হাজার লোকজন আবাসনের জন্য ২ কাঠা থেকে শুরু করে ৫/১০ কাঠা পর্যন্ত ক্রয় করে কিছু অংশে বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাসও করছে। সেখানে বেশ কিছু মসজিদ, মন্দির, মাদরাসা ইত্যাদি নির্মাণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এখানে অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের মাথা গোঁজার শেষ স্থান একখণ্ড ভূমি রয়েছে।

যেখানে সরকার গৃহহীন মুক্তিযোদ্ধাদের সরকারি জায়গা বরাদ্দ দিয়ে আবাসনের ব্যবস্থা করছেন সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের শেষ সম্বল একখণ্ড জমি আবাসন প্রকল্পের নামে অধিগ্রহণ করার প্রস্তাব করা এবং প্রস্তাব বাস্তবায়নে সাহায্য করা নিতান্তই অমানবিক। এই ৫০০ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করা হলে গৃহে বসবাসরত অসংখ্য লোকজন গৃহহীন হবে। হাজার হাজার লোকজনের ক্রয়কৃত জায়গায় আবাসনের প্রক্রিয়াধীন কর্মকাণ্ড ধুলিস্মাৎ হবে। হিন্দু মুসলিমের ঐতিহ্যবাহী মসজিদ মন্দিরের ঐতিহ্য নষ্ট হবে। এ সকল বিষয় বিবেচনা করে বাস্তবতার আলোকে গণ শুনানির ব্যবস্থাসহ বিষয়টি তদন্ত করে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন থেকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রস্তাবনাটি বাতিলের দাবি জানানো হয়।

স্মারকলিপি গ্রহণকালে জেলা প্রশাসক বলেন, ওই এলাকাটি সারা বছর পানির নিচে তলিয়ে থাকে বিধায় জায়গাটি উন্নত করার জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছিল। ওই এলাকায় যাতায়াতের জন্য রাস্তাঘাট নেই। আমি যতদূর জানি রাজউকের আবাসন প্রকল্প হচ্ছে অধিগ্রহণকৃত সেই জায়গাটি উন্নত করার মাধ্যমে। যারা প্রকৃত মালিক তাদের কাছেই আবাসন নির্মাণের জন্য জমি বুঝিয়ে দিবে। রাজউক সেখানে বেশ কয়েকটি বড় রাস্তা নির্মাণ করবে।

ওই সময় এলাকাবাসী জেলা প্রশাসককে জানান, তাদের ক্রয়কৃত জমিতে যাওয়ার জন্য বেশ কিছু রাস্তা রয়েছে কিন্তু পানি নিস্কাশনের খালটি খনন না করার কারণে পানিতে তলিয়ে থাকায় রাস্তা দূর থেকে দেখা যায় না। এ সময় জেলা প্রশাসক এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা সেখানে রাস্তা তৈরি করেন। আমি আপনাদের দাবির বিষয়টি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালকে জানাবো।
 
শাহাদাত হোসেন/এসএস/এমএস