রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্লাস্টিক নিষিদ্ধের দাবি সিসিএনএফের
কক্সবাজারের পরিবেশ সুরক্ষায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্লাস্টিক নিষিদ্ধসহ একাধিক দাবি জানিয়েছে জেলাটিতে কর্মরত এনজিও এবং সুশীল সমাজের নেটওয়ার্ক কক্সবাজার সিভিল সোসাইটি অ্যান্ড এনজিও ফোরাম (সিসিএনএফ)।
রোববার (৬ মার্চ) দুপুরে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ দাবি জানায় সিসিএনএফ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সব প্রক্রিয়ায় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশ নেওয়া নিশ্চিত, ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার না করা এবং বাঁশের ব্যবহার সীমিত করার উদ্যোগ নেওয়া নিশ্চিত করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন উন্নয়ন সংস্থা পালসের নির্বাহী পরিচালক আবু মোরশেদ চৌধুরী ও কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তৃতা দেন উখিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান হামিদুল হক চৌধুরী।
উন্নয়ন সংস্থা ইপসার প্রধান নির্বাহী আরিফুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গা কর্মসূচিগুলোর কার্যকর সমন্বয়ের লক্ষ্যে ইন্টার সেকটোরাল কো-অর্ডিনেশন গ্রুপের (আইএসসিজি) প্রধান করা উচিত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারকে এবং সহ-প্রধান করতে হবে জেলা প্রশাসককে।
বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার সদস্যরা বলেন, যৌথ চাহিদা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে স্থানীয় সংস্থাগুলোকেও সম্পৃক্ত করতে হবে। জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান বা জেআরপিতে সরকারের অবদানের যথাযথ স্বীকৃতি থাকতে হবে, কারণ ভাসানচরে ৪০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পাশাপাশি সরকার এ পর্যন্ত রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ব্যয় করেছে। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা কর্মসূচি বাস্তবায়নের সব ক্ষেত্রে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে বাংলা ভাষা ব্যবহার করতে হবে। স্থানীয় এবং জাতীয় এনজিওগুলোর মাধ্যমে মোট তহবিলের ২৫ শতাংশ ব্যয় করে গ্রান্ড বার্গেইন প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান তারা।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সহসভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরে প্রচুর প্লাস্টিক ও অন্যান্য বর্জ্য রয়েছে। এনজিওগুলোকে এ বিষয়ে বিকল্প উপায় খুঁজে বের করতে সৃজনশীল হতে হবে। ভূ-উপরিস্থ পানি সংরক্ষণ ও ব্যবহার করতে হবে। ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন এখনই বন্ধ করা উচিত এবং নাফ নদী থেকে পানি আনার জন্য পানি শোধনাগার স্থাপন করতে হবে।
পালসের আবু মোরশেদ চৌধুরী বলেন, জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানকে (জেআরপি) একটি লাইভ বা চলমান দলিল হওয়া উচিত, যাতে স্থানীয় সংস্থাগুলোর পক্ষে এ প্রক্রিয়ায় যে কোনো সময় অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকে। বিদ্যমান সেক্টরগুলোকে পুনর্গঠিত করা উচিত যাতে স্থানীয় সব সংস্থার নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।
কোস্ট ফাউন্ডেশনের রেজাউল করিম চৌধুরী কক্সবাজারে টেকসই স্থানীয় সুশীল সমাজ গঠনের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতি অংশীদার নির্বাচনের নীতিমালা বাস্তবায়নের দাবি জানান।
তিনি বলেন, অংশীদার নির্বাচনের এ নীতিমালাটি স্বার্থের সংঘাত ছাড়াই স্বচ্ছভাবে বাস্তবায়ন করা উচিৎ। স্থানীয় এনজিওগুলো কোনো ক্ষেত্রে অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করা হয়না। সেক্ষেত্রে তাদের দুর্বলতা এনজিওকে জানানো প্রয়োজন। যাতে তারা প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে পারে।
উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হামিদুল হক চৌধুরী প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সব মানবিক সংস্থাকে স্থানীয় সরকার নেতাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দাবি জানান। মানবিক সংস্থা থেকে স্থানীয়দের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং রোহিঙ্গা কর্মসূচি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে বিশেষ সংসদীয় ককাস গঠনের আহ্বান জানান।
এসএম/একেআর/জেআইএম