চায়ের সঙ্গে বই পড়া ফ্রি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ৫ তরুণ শিক্ষার্থী হোসাইন মোহাম্মদ রুমি, মোসাদ্দেক চৌধুরী মুকুট, আশিকুর রহমান, শরিফুল আমিন তানভীর ও শাহাদাৎ হোসেন মজিদ। পাঁচজনই ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। ভালো বন্ধু হওয়ায় চলেন একসঙ্গে। পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু একটা করার ইচ্ছা ছিল তাদের।
যেই ভাবনা সেই কাজ। জেলা শহরের ব্যস্ততম এলাকা টিএ রোডের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে দিলেন ব্যতিক্রমী একটি চায়ের দোকান। দোকানের নাম দিলেন ‘চা কুঞ্জ’। এই দোকানে চা পান করতে মানুষ বিনামূল্যে পড়তে পারবেন বই।
সরেজমিনে শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশ আর শুকনো খড় দিয়ে তৈরি করা একটি ছোট্ট ঘর। সেই ঘরের দুই পাশে রাখা বইয়ের স্তূপ। ভেতরে মাটির কাপে পরিবেশন করা হচ্ছে চা। চা একজন তৈরি করছেন, আর পরিবেশন করছেন ৪ তরুণ। চায়ের দোকানে পাশে দাঁড়িয়ে অনেকে চা পান করছেন। কেউ কেউ চা পান করার পাশাপাশি বই পড়ছেন।
এই চা কুঞ্জ খোলা থাকে বিকেল ৪টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। এখানে পাওয়া যাচ্ছে ১০ প্রকারের চা। চায়ের দাম ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকার ভেতরে। ৫ শিক্ষার্থীর এমন উদ্যোগ দেখে চা পিপাসুরা প্রশংসা করছেন।
চা পান করতে আসা কয়েকজন জানান, শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়। তাছাড়া দোকানটিও ব্যতিক্রম। এখনে চায়ের পাশাপাশি বই পড়ার সুবিধা রয়েছে। অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারাখানা বলে একটি প্রবাদ রয়েছে। আমাদের সমাজে যারা বেকার রয়েছে তারাও যদি এমন উদ্যোগী হন, তাহলে যুবকেরা মাদকাসক্ত হবে না।
চা কুঞ্জের অন্যতম উদ্যোক্তা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র হোসাইন মোহাম্মদ রুমি জানান, মানুষ অহেতুক আড্ডা দিয়ে সময় অপচয় করে। চায়ের আড্ডার সঙ্গে যদি গুরুত্বপূর্ণ বইগুলো পড়া যায়, তাহলে অনেক কাজে আসবে। চায়ের সঙ্গে বই পড়ার আইডিয়াটা নিয়ে আমরা বন্ধুরা আলোচনা করি। সবাই এতে সম্মতি প্রকাশ করেন। দোকানটি চালু করেছি মাত্র ৪-৫ দিন হলো। আপাতত দোকানে ইতিহাস, ঐতিহ্য, বিভিন্ন ধরনের উপন্যাস ও ইসলামিক বই রয়েছে। পাঠকদের জন্য আমরা আরও বই সংযোজন করবো।
আবুল হাসনাত/এফএ/এমএস