ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

আখেরি মোনাজাত রোববার

প্রকাশিত: ০৪:০১ এএম, ০৯ জানুয়ারি ২০১৬

মহান আল্লাহ তালার নৈকট্য লাভের ব্যাকুলতায় দ্বীনের দাওয়াতে মেহনত করার জন্য ইসলামের মর্মবাণী সর্বত্র পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা দলে দলে ছুটে আসছেন টঙ্গীর তুরাগ তীরে ইজতেমা ময়দানে। আজ বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিন। গোটা ইজতেমাস্থলে দেশ-বিদেশের মুসল্লিদের পদ চারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে।

আল্লাহ প্রদত্ত বিধি-বিধান ও রাসুল (সা.) প্রদর্শিত তরিকা অনুযায়ী জীবন গড়ার আহ্বান জানিয়ে দেশ-বিদেশের লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লির জিকির আসকার, ইবাদত বন্দেগি আর পবিত্র কোরআনের আলোকে গুরুত্বপূর্ণ বয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত হচ্ছে।

রোবরববার বেলা আনুমানিক ১১টার দিকে আখেরি মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে তাবলিগ জামাত আয়োজিত ৫১তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। ইজতেমা ময়দানের বিদেশি নিবাসের পূর্বপার্শ্বে বিশেষভাবে স্থাপিত মোনাজাত মঞ্চ থেকে এ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। বিশেষ এ তাৎপর্যপূর্ণ মোনাজাতে প্রায় ৩০ লাখ মুসল্লি অংশ নেবেন বলে ইজতেমার আয়োজকরা ধারণা করছেন।

হেদায়েতি বয়ান :
মোনাজাতের আগে ভারতের হযরত মাওলানা মুহাম্মদ সাদ হেদায়েতি বয়ান করবেন। তাবলিগ জামাতের শীর্ষ স্থানীয় মুরুব্বিদের পরামর্শের ভিত্তিতে তাবলিগ জামাতের দিল্লীর মারকাজের শুরা সদস্য হযরত মাওলানা মুহাম্মদ সা`দ ফজিলতপূর্ণ এ আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ :
ইজতেমার আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে মুসল্লিদের সুবিধার্থে শনিবার বিকাল থেকেই ওই এলাকায় যানবাহন চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ বিধি নিষেধ বলবৎ থাকবে। এবারের বিশ্ব ইজতেমায় উল্লেখযোগ্য দিক রয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রায় ১২ হাজার র‌্যাব ও পোশাকধারী পুলিশের পাশপাশি রয়েছে সাদা পোশাকে কয়েক হাজার গোয়েন্দা সদস্য। আকাশ ও নৌপথে রয়েছে র‌্যাবের সতর্ক নজরদারি।

আয়োজক কমিটির নেতৃবৃন্দ বলেছেন, স্থান সংকুলানসহ বিশ্ব ইজতেমায় অংশ গ্রহণকারীদের বিভিন্ন অসুবিধার কথা বিবেচনা করে ২০১১ সাল থেকে দুই দফায় বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করা হচ্ছে। এবারই প্রথম দেশের ৩২টি জেলা দুই পর্বে ইজতেমায় অংশ নিচ্ছে। বাকি ৩২ জেলার মুসল্লিরা আগামী বছর ইজতেমায় অংশ নেবেন। যারা প্রথম পর্বে বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দেবেন তারা দ্বিতীয় পর্বে অংশ নিতে পারবে না। প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত শেষে মুসল্লিরা ইজতেমা মাঠ ছেড়ে দেয়ার পর ১৫ জানুয়ারি বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়ে ১৭ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে ইজতেমার সকল পর্ব।

রোববার আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে ৮২টি দেশের ১০ সহস্রাধিক বিদেশিসহ প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ লাখ মুসল্লি অংশ নেবেন। টঙ্গীর তুরাগ নদীর পাড়ের ১৬০ একর সুবিশাল চটের সামিয়ানায় ইজতেমা ময়দানকে প্রথম পর্বে ১৭টি ও দ্বিতীয় পর্বে ১৬টি জেলাকে মোট ২৭টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে।

তাশকিলের কামরা স্থাপন :
ইজতেমার প্যান্ডেলের উত্তর-পশ্চিমে তাশকিলের কামরা স্থাপন করা হয়েছে। বিভিন্ন খিত্তা থেকে বিভিন্ন মেয়াদে চিল্লায় অংশ গ্রহণেচ্ছু মুসল্লিদের এ কামরায় আনা হচ্ছে এবং তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে। পরে কাকরাইলের মসজিদের তাবলিগি মুরুব্বিদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এলাকা ভাগ করে তাদের দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাবলিগি কাজে পাঠানো হবে।

মিডিয়া সেন্টার স্থাপন :
বিশ্ব ইজতেমায় এবারই প্রথম সাংবাদিকদের জন্য মিডিয়া সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। গাজীপুরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ হারুন অর রশীদ পিপিএম এর উদ্যোগে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম সংলগ্ন স্থাপিত মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের কাজের সুবিধার জন্য টেলিফোন, সার্বক্ষণিক বিদ্যুত ব্যবস্থা রয়েছে।

পকেটমার আটক :
র‌্যাব-১, উত্তরা, ঢাকার একটি আভিযানিক দল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিউল ইসলাম এর নেতৃত্বে শনিবার রাতে বিশ্ব ইজতেমা এলাকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে একজন পকেটমারকে হাতেনাতে আটক করে। আটকের নাম মো. রফিকুল ইসলাম (১৮)। তিনি নরসিংদীর মনোহরদী থানার চর মান্দালিয়া গ্রামের রুকন উদ্দিনের ছেলে।

ইজতেমা ইতিহাস :
ইজতেমার মুরুব্বিদের দেয়া তথ্যমতে, ১৯৪৬ সালে প্রথম কাকরাইল মসজিদে ইজতেমার আয়োজন শুরু করা হয়। তারপর ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামের হাজী ক্যাম্পে ও ১৯৫৮ সালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর লোক সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ১৯৬৬ সালে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বর্তমান স্থলে স্থানান্তর করা হয়েছে। পরে সরকারিভাবে তুরাগ তীরের ১৬০ একর জমি স্থায়ীভাবে ইজতেমার জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়।
                    
আমিনুল ইসলাম/এসএস/এমএস

আরও পড়ুন