ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

টিকে থাকার লড়াইয়ে মিটিপুুর গ্রামের আখচাষিরা

জেলা প্রতিনিধি | মৌলভীবাজার | প্রকাশিত: ০৭:০৯ পিএম, ২৮ জানুয়ারি ২০২২

মৌলভীবাজারের রাজনগরে মনু নদী পার হয়েই মিটিপুর গ্রাম। আগে শীতের সকালে ওই গ্রামে ফুটে উঠতো ভিন্ন চিত্র। গ্রামবাসী দিনের শুরুটা করতেন আখের রস পান করে। সকাল হলেই চাষিরা আখ মাড়াই, রস বিক্রি ও গুড় তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন। শীতের সকালে রসের পিঠা, মিষ্টিগুড়ের পিঠা ও মিষ্টি খিচুড়ি ছিল ঐতিহ্যবাহী মুখরোচক খাবার।

প্রায় দুইশ পরিবার আখচাষের সঙ্গে জড়িত ছিল। তবে মিটিপুর গ্রামে সেই ঐতিহ্য আর আগের মতো নেই। তারপরও পুরোনো ঐতিহ্যকে ধরে রাখছেন এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছেন অল্প সংখ্যক আখচাষি। তারা বলছেন, আখচাষ লাভজনক। তবে চাষের খরচ বৃদ্ধি আর মাড়াই দেওয়ার আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকায় তারা এ পেশায় কষ্ট করে টিকে আছেন।

Sugar-(3).jpg

সরেজমিন চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একসময় মিটিপুর গ্রামের দুইশ পরিবার আখচাষের (স্থানীয় নাম কুশিয়ার) সঙ্গে জড়িত ছিল। এখন হাতেগোনা ৫ থেকে ৬টি পরিবার পূর্ব-পুরুষদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে আখচাষ করছে।

আখচাষে সরকারি কোনো সহযোগিতা পান না বলে জানালেন মিটিপুর গ্রামের এলাইচ মিয়া (৭৫)। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আখচাষ করতে খরচ অনেক বেশি লাগে। মাড়াই দেওয়ার জন্য আমরা সনাতন পদ্ধতি ব্যবহার করে আসছি। আগে মহিষ দিয়ে মাড়াইয়ের কাজ চলতো। এখন এক মহিষের দাম এক লাখ টাকা। এর পরিবর্তে কলের লাঙল ব্যবহার করে মাড়াইয়ের কাজ চালাচ্ছি।’

Sugar-(3).jpg

একই গ্রামের হাবিব মিয়া (৫৫) বলেন, ১৫ বছর আগেও গ্রামে শতাধিক পরিবার আখচাষের সঙ্গে জড়িত ছিল। এখন আর আগের অবস্থা নেই। সমস্যার কারণে মানুষ দিন দিন আখচাষ ছেড়ে দিচ্ছে।

তবে আখচাষ লাভজনক বলে মন্তব্য করেন এ চাষি। তিনি বলন, এক বিঘা জমিতে আখচাষ করতে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। লাভ হয় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। কৃষি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মানুষ আবার আখচাষে ফিরে আসবে।

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী জাগো নিউজকে বলেন, মৌলভীবাজারের মনু ধলাই নদীর তীর ও অন্যান্য জায়গায় বিচ্ছিন্নভাবে প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে আখচাষ হয়। শীতের পিঠাপুলি তৈরির জন্য আখের রস বড় এক উপকরণ। চাষিরা উদ্যোগী হলে তাদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।

আব্দুল আজিজ/এসআর/এমএ