ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

সেই হাফেজের পাশে দাঁড়ালো উপজেলা প্রশাসন

জেলা প্রতিনিধি | জামালপুর | প্রকাশিত: ০২:৪২ পিএম, ২৭ জানুয়ারি ২০২২

অন্ধ হাফেজ চাঁন সওদাগরের (৫৩) রোজগারের একমাত্র অবলম্বন ব্রেইল মেশিন। কিন্তু ছয়মাস ধরে সেই মেশিনটি অকেজো। এতে বন্ধ হয়ে গেছে চাঁন সওদাগরের উপার্জন। ব্রেইল মেশিনের জন্য ছয়মাস মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও পাননি সহযোগিতা।

সম্প্রতি দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগো নিউজে ‘সংসার চালাতে নতুন ব্রেইল মেশিন চান দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হাফেজ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে টনক নড়ে প্রশাসনের। খোঁজ নিতে তার বাড়িতে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুন্নাহার শেফা। দায়িত্ব নেন সকল সমস্যা সমাধানের।

তাছাড়াও অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে তার পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলেও জানা যায়।

চাঁন সওদাগর জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার হাতিভাঙ্গা ইউনিয়নের পূর্ব আমখাওয়া গ্রামের মৃত মনছুর আলীর ছেলে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তিনি ওই ইউনিয়নে বসবাস করে আসছেন।

পারিবারিক সূত্র জানায়, ব্রেইল মেশিন দিয়ে অন্ধদের জন্য পবিত্র কোরআন ও হাদিসের বই লিখে সংসার চলতো অন্ধ হাফেজ চাঁন সওদাগরের। কিন্তু ছয়মাস ধরে মেশিনটি বিকল হয়ে পড়ে আছে। বিকল হয়ে যাওয়া মেশিনটি সারাতে বহু জায়গায় ঘুরেছেন চাঁন সওদাগর। কিন্তু কারও কোনো সহযোগিতা পাননি।

এ বিষয়ে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুন্নাহার শেফা জাগো নিউজকে বলেন, অন্ধ হাফেজ চাঁন সওদাগরের বিষয়ে শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমি তার বাড়িতে গিয়েছিলাম এবং তাকে আশ্বস্ত করেছি তার সকল সমস্যা সমাধানের। তিনি একটি ঘরের আবদার করেছেন, যা আমাদের উপজেলা চেয়ারম্যান করে দেবেন বলে জানিয়েছেন। তাছাড়া ব্রেইল মেশিনটি উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে দেওয়া হবে। যদিও এটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।

jagonews24

ক্রয়কৃত জমি নিয়ে তার একটি সমস্যা রয়েছে সেটির সমাধানেরও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। টাকার অভাবে কলেজে ভর্তি হতে পারছে না ছেলে, সেই সমস্যা সমাধানের আশ্বাসও দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, চাঁন সওদাগরের সংসারে স্ত্রী ও এক ছেলে রয়েছে। ছেলেটি এবার এসএসসি পাস করেছে। এখন কলেজে ভর্তির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ১০ বছর আগে কিছুলোক তাকে সাহায্য-সহযোগিতা করেছিলেন একটি ব্রেইল মেশিন কেনার জন্য। সেই মেশিনটি অকেজো হয়ে গেছে। বর্তমানে একটি ব্রেইল মেশিন কিনতে ৬০ হাজার টাকা লাগতে পারে। কিন্তু অর্থের অভাবে নতুন মেশিন কিনতে পারছেন না।

ফলে কর্মহীন হয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েন। সম্প্রতি প্রশাসন তার পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেওয়ায় পরিবারে আশার আলো দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে চাঁন সওদাগর জাগো নিউজকে বলেন, আমার কথা শুনে উপজেলা প্রশাসনের লোকজন বাড়িতে ছুটে এসেছিলেন। এজন্য গণমাধ্যম কর্মীদের ধন্যবাদ জানাই।

তিনি আরও বলেন, উপজেলা প্রশাসন আমাকে আশ্বস্ত করেছেন সকল সমস্যা সমাধানের। অনেক মানুষও আমার খোঁজ খবর নিচ্ছেন। এখন আমার খুবই ভালো লাগছে। যে হতাশায় জীবন যাপন করেছি, প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হলে বাকি জীবন নিশ্চিন্তে থাকতে পারবো।

নাসিম উদ্দিন/এফএ/এএসএম