ঝিনাইদহে পিঠা বিক্রি করে স্বাবলম্বী শতাধিক পরিবার
কবি সুফিয়া কামাল গ্রাম বাংলার পৌষ পার্বণে শীতের পিঠা খাওয়ার শাশ্বত রূপ অঙ্কন করে বলেছেন- `পৌষ পার্বণে পিঠা খেতে বসি খুশিতে বিষম খেয়ে...আরো উল্লাস বাড়িয়াছে মনে মায়ের বকুনি পেয়ে।`
শীত আর পিঠা একই সুতোই গাঁথা। বছর ঘুরে ঝিনাইদহের প্রকৃতিতে লেগেছে হিমেল হওয়ার পরশ। উঠেছে নতুন ধান। গ্রাম-বাংলার প্রতিটি বাড়িতেই চলছে আয়োজন করে নানা ধরনের পিঠা-পায়েশ তৈরির ধুম।
ব্যস্ত নাগরিক জীবনে ঘরে ঘরে পিঠা বানানোর সময় মেলা ভার। যেহেতু শীতের পিঠার ভিন্ন স্বাদ এনে দেয় নতুন মাত্রা, সে কারণেই শহরের কিছু হত-দরিদ্র পরিবার এই মৌসুমে পিঠা বিক্রি করে স্বাবলম্বী হচ্ছে। শহরের অলিতে-গলিতে, প্রধান-প্রধান মোড়গুলোতে, বিভিন্ন রাস্তার ধারে, বাসস্ট্যান্ডে, বড়-বড় বিপণী বিতানের সামনে, হাটে-বাজারে, স্কুল-কলেজের সামনে, অফিস-অদালত চত্বরসহ নানা জায়গায় এক শ্রেণির মানুষ রকমারি স্বদের পিঠার পসরা সাজিয়ে বেশ জমজমাট ব্যবসা করছে। একদিকে তারা শহরের মানুষের পিঠা খাওয়ার সাধ মেটাচ্ছে তেমনি তারা অর্থনৈতিকভাবেও স্বাবলম্বী হচ্ছে।
কোনো ঝামেলা ও অভিজ্ঞতা ছাড়াই শীতের পিঠা খাওয়ার একমাত্র মাধ্যম হল ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান। এ সকল দোকানে প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে সকাল ৯টা এবং বিকাল ৪ থেকে শুরু হয়ে রাত ৮ পর্যন্ত চলে রমরমা বেচাকেনা।
ঝিনাইদহ শহরের পিঠা বিক্রেতা ইনতাজ আলী বলেন, শীতের পিঠার ব্যবসাটা লাভজনক হওয়ায় বছরের এই সময়টায় তিনি পিঠা ব্যবসা করে থাকেন। এই ব্যবসায় তার ৫ জনের সংসার ভালোভাবেই চলে যাচ্ছে। তিনি আরও জানান, প্রতিদিন সকাল ও বিকালে তিনি দোকান দেন। তিনি এখানে ভাপা পিঠা বা ধুপি বিক্রয় করেন। চালের গুড়া, খেজুরের পাটালি, নারিকেল ও লবণের মিশ্রণে তৈরি হয় এ পিঠা।
প্রতিদিন তিনি ১৫ কেজি চাউলের গুড়া, ৫/ ৬ কেজি খেজুরের পাটালি ও ৪টা নারিকেল ব্যবহার করে থাকেন পিঠা তৈরিতে। প্রতিটি পিঠা ৫ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। যা থেকে তার প্রতিদিন লাভ হয় ৪ থেকে ৫শ টাকা।
আরও অনেক মৌসুমী পিঠা ব্যবসায়ী রয়েছে এখানে। এসব দোকানে ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, পুলি পিঠা, সাজের পিঠা, পাটি সাপ্টাসহ বিভিন্ন ধরনের বাহারি ও মজাদার পিঠা পাওয়া যায়। যা বিক্রি করে সবার সংসার ভালোভাবেই চলছে।
কামাল মিয়া নামে একজন পিঠা খেতে খেতে বললেন, সব ধরনের ক্রেতা এখানে আসে পিঠা খেতে ও কিনতে। ব্যস্ততার কারণে বাড়িতে পিঠা খাওয়ার সময় হয়ে ওঠে না। তাই এখানে সেই স্বাদ নেয়ার চেষ্টা করছি।
এসএস/আরআইপি