নিখোঁজ ছেলের গোপন স্ত্রী নিয়ে বিপাকে বাবা
ছেলে আব্দুল হালিম (৩৫) গত ৪ মাস ধরে নিখোঁজ। বাড়িতে হালিমের বাবা-মাসহ প্রথম স্ত্রী ও শিশু কন্যা রয়েছে। এর মধ্যে হালিমের গোপনে বিয়ে করা অন্তঃসত্ত্বা দ্বিতীয় স্ত্রী রত্না খাতুন (৩২) শ্বশুর আব্দুস সামাদ ঠান্টুর (৬০) বাড়িতে এসে উঠেছেন। জানিয়েছেন স্বামীকে ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে যাবেন না।
একদিকে নিখোঁজ ছেলের জন্য দুশ্চিন্তা অন্যদিকে দ্বিতীয় পুত্রবধূর সালিশে অতিষ্ঠ হয়ে শয্যাশায়ী বৃদ্ধ আব্দুস সামাদ ঠান্টু।
পাবনার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বেজপাটিয়াতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। হালিমের দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করা রত্না ধর্মান্তরিত মুসলিম। তিনি সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলার হিজলডাঙ্গা গ্রামের শ্রী সুবল চন্দ্রের মেয়ে। তিনি এখন ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
রত্না খাতুন পাবনার চাটমোহর থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, আব্দুল হালিম ২০১৭ সালে ঢাকার গাবতলিতে পাথরের ব্যবসা করতেন। সেসময় তারা পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে যান। রত্নার বিয়ে ও স্বামীর কথা জানলেও নিজের প্রথম স্ত্রী ও সন্তানের কথা গোপন রাখেন হালিম। বছর দু’য়েক প্রেমের পর ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে রত্না সনাতন ধর্ম থেকে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এরপর হালিম ৫০ হাজার টাকা দেনমোহর ধার্য করে তাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা ৩ বছর সংসার করেন।
রত্না অভিযোগ করে জানান, ওই সময়ের মধ্যে রত্নার কাছ থেকে তার স্বামী আ. হালিম গ্রামের বাড়ি মেরামত ও তার ব্যবসার কথা বলে প্রায় ৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এরপর ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে রত্নার নামে থাকা পারিবারিক সম্পত্তি বিক্রি করে আরো ১০ লাখ টাকা দিতে বলেন। কিন্তু তিনি তা না করায় হালিম গ্রামের বাড়ি যাওয়ার কথা বলে আত্মগোপন করেন।
রত্না জানান, তিনি কোনো উপায় না দেখে স্বামীর গ্রামের বাড়ি এসে ওঠেন। তিনি গত তিন মাস ধরে শ্বশুরবাড়িতে এসে উঠেছেন। হালিমের বাড়ি এসে জানতে পারেন তিনি বিবাহিত এবং তার সন্তান রয়েছে।
এদিকে গ্রাম্য রাজনীতির কবলে পড়েছেন বলে জানান আব্দুস সামাদ ঠান্টু। তিনি জানান, হালিমের দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করা রত্না স্থানীয় কিছু ব্যক্তির প্ররোচনায় একের পর এক সালিশ বৈঠক করে তার জীবনকে অতিষ্ঠ করে ফেলেছেন।
চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (আইসি) এস.এম নুরুজ্জামান সোমবার ( ১৭ জানুয়ারি) ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
নুরুজ্জামান জানান, আসলে অভিযোগ যার নামে তিনি তো পলাতক বা নিখোঁজ। তিনি বিয়ে করেছেন গোপনে। পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়নি। তাই হালিমের বৃদ্ধ বাবাকে এ ব্যাপারে নির্দোষ বলেই মনে হয়। উপরন্তু তিনি অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটিকে মানবিকভাবে আশ্রয় দিয়েছেন। রত্না খাতুন লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর অভিযুক্ত হালিমের খোঁজ করা হচ্ছে।
চাটোমাহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আনোয়ানর হোসেন জানান, তারা এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আমিন ইসলাম জুয়েল/এফএ/জেআইএম