ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে বাবার দ্বন্দ্ব : ভোগান্তির শিকার মেয়ে

প্রকাশিত: ১২:৪৯ পিএম, ০৪ জানুয়ারি ২০১৬

ম্যানেজিং কমিটির সদস্যের সঙ্গে বাবার কোন্দলের জেরে ভর্তি রেজিস্ট্রার থেকে এক ছাত্রীর নাম বাদ দেয়া হয়েছে। তাকে বই দেয়া হবেনা ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। প্রতিবাদ করায় ছাত্রীর বাবা-মা ও দাদীকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার হাসনাবাদ আদর্শ জনতা বিদ্যাবিতানে।

অভিযোগে সূত্রে জানা যায়, হাসনাবাদের বুড়ীরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৩.৭৫ পয়েন্ট নিয়ে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় পাশ করে স্কুল সংলগ্ন এলাকার এনামুল হকের মেয়ে রেখামনি হাসনাবাদ আদর্শ জনতা বিদ্যাবিতানে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। ভর্তি ক্রমিক ৩০। গত ১ জানুয়ারি শুক্রবার ওই স্কুলে রেখা মনিকে বাদ দিয়ে অন্যান্য সকল ছাত্র-ছাত্রীকে বই দেয়া হলে সে কান্নায় ভেঙে পড়ে এবং ঘটনাটি বাড়িতে এসে তার বাবাকে জানায়।

এ ঘটনায় রেখা মনির বাবা এনামুল হক স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, বইয়ের বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। পরে ভর্তি রেজিস্ট্রারে মেয়ের নাম বাদ দেয়া দেখে এর কারণ জানতে চাইলে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য লিয়াকত ও সহকারী শিক্ষক নুরনবী সরকার জানিয়ে দেয় তার মেয়ের ভর্তি এ স্কুলে হবে না। এর প্রতিবাদ করলে লিয়াকতসহ হুমায়ুন, সোবহান, মাহফুজ, ইসপাকুল তাকে মারপিট করে। এসময় এনামুলের স্ত্রী ও বৃদ্ধ মা এসে তাকে রক্ষার চেষ্টা করলে তাদেরকেও লাঞ্ছিত করে তারা।

এনামুল হক বলেন, সবাই বই পাইছে, আমার মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে বলছে বই দিবেনা। স্কুলে গিয়ে দেখি তালিকায় মেয়ের নাম কাটা। কেন কাটলেন বলতেই তারা আমাকে মারধর করে।

এনামুলের স্ত্রী শাহানাজ বলেন, আমার স্বামীকে তারা মারে আর জোর করে লাইব্রেরিত ঢোকায়। দৌঁড়ি গিয়া টানি ধরছি। ধাক্কে মাটিত ফেলে দিছে আমাকে।

মা মজিরন বলেন, মুই বয়স্ক মানুষ বা, কোন আক্কেলে ধাক্কে মারে মোক ফেলে দেয়।
 
ছাত্রী রেখা মনি জানায়, সবাই বই নিয়ে বাড়ি যায়। আমাক দেয়না। পরে বাড়ি এসে আব্বাকে বলি। পুলিশ আসার পর আমাক বই দিছে।

৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র মশিয়ার বলেন, মোক বই দিছে ১৩ খ্যান। হামার ক্লাশের সবাইকে দিছে।

স্থানীয় আখের আলী বলেন, কয়েকজন লোক কমিটির হয়ে স্কুলটি ধ্বংসের চেষ্টা করছে। তারা ব্যক্তিগত সম্পদ মনে করে স্কুলটি। প্রধান শিক্ষক তাদের কথামতো চলে। মেয়েটির ভর্তি হওয়ার নাম কেটে দেয়া হয়েছে।

গোলাম মওলা বলেন, এটা নতুন নয়, কিছু লোক স্কুলটাকে জিম্মি করে রেখেছে। আমার এক ছেলেকে এ স্কুলে ভর্তি করতে দেয়নি। সে পড়ালেখা করতে পারেনি।

এসব ব্যাপারে স্কুলটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাওলানা আব্দুস সামাদ বলেন, সব ক্লাশের বই দেয়ার পর ভর্তি জটিলতা থাকায় ৬ষ্ঠ শ্রেণির দু’জনকে বই দেয়া হয়। বাকিদের পরে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু এনামুল তখনি চাচ্ছে। এজন্য গোলমালটা হয়।

এ ঘটনায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, কারো সঙ্গে কারো শত্রুতা থাকতে পারে সেটা দেখানোর জায়গা বিদ্যালয়ে নয়। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হায়াত মো. রহমতুল্লাহ বলেন, ঘটনা জানার পর স্কুলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্তের প্রক্রিয়া চলছে।

নাজমুল/এমএএস/পিআর