ফেনী সদরের ৪১ কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ, জিরো টলারেন্সে প্রশাসন
কাল সকাল ৮টা থেকে পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হবে।
এ ধাপে ফেনী সদর উপজেলার ১২ ইউনিয়নের ছয়টিতে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন নৌকার প্রার্থী। বাকি ছয় ইউনিয়নে ভোটের মাঠে রয়েছেন ১৫ চেয়ারম্যান প্রার্থী।
এছাড়া ১২ ইউনিয়নে সাধারণ সদস্য (মেম্বার) পদে ৪৫৬ জন ও সংরক্ষিত সদস্য (নারী মেম্বার) পদে ১০২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের মতো লেমুয়া ইউনিয়নের প্রার্থীদেরও প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে সোমবার (৩ জানুয়ারি)। গোটা ইউনিয়নে ভোটের আমেজ বিরাজ করছে।
এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মোশাররফ উদ্দিন নাছিম (নৌকা প্রতীক), স্বতন্ত্র প্রার্থী ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী (আনারস প্রতীক) এবং মো. ইসমাইল (হাতপাখা প্রতীক)। এরমধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যান নাছিমের নৌকার পালেই হাওয়া লেগেছে বলে জানা গেছে।
চেয়ারম্যান পদে খুব বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা না হলেও সদরের অন্যান্য ইউনিয়নের মতো লেমুয়ার ওয়ার্ডগুলোতেও মেম্বার পদে লড়াই জমবে বলে মনে করা হচ্ছে। সে জন্য উৎসবের আমেজের পাশাপাশি লেমুয়ার কিছু ওয়ার্ড ঘিরে উদ্বেগও রয়েছে। এই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড ঘিরেই ভোটারদের মনে উৎকণ্ঠার কথা বেশি শোনা যাচ্ছে।
এখানে সাধারণ সদস্য (মেম্বার) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান মেম্বার দেলোয়ার হোসেন দেলু (টিউবওয়েল প্রতীক), নজরুল ইসলাম আজাদ (ফুটবল প্রতীক), মশিউর রহমান পাটোয়ারী (আপেল প্রতীক), মোহাম্মদ ইব্রাহিম (মোরগ প্রতীক) ও নুরুল ইসলাম জমা (তালা)। এদের মধ্যে প্রায় সবাই শেষ সময় পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন। এরমধ্যে দুই বারের মেম্বার দেলোয়ার হোসেনের পক্ষেই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বড় একটি অংশকে মাঠে সক্রিয় দেখা গেছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিগত নির্বাচনগুলোতে বহিরাগত কাউকে এলাকায় দেখা না গেলেও এবার ওয়ার্ডটিতে এই শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এবারের ভোট ঘিরে আড়ালে-আবডালে অর্থ লেনদেনের খবরও মিলছে। এমনকি সুষ্ঠু ভোট বিঘ্নিত করার অপচেষ্টাও হতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।
সে জন্য স্থানীয়রা চান, ভোট যেন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হয়; সবাই যেন ভোট দিতে পারে, প্রশাসন যেন এ বিষয়ে নজর রাখে।
অবশ্য ফেনী সদর ইউপি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন। জানা গেছে, নির্বাচনের দিন মাঠে থাকবে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসার সদস্যরা। পাশাপাশি স্ট্রাইকিং ফোর্সসহ ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্বে পালন করবেন।
এ ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার ও টিউবওয়েল প্রতীকের প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন দেলু বলেন, ‘১০ বছর ধরে মেম্বার হয়ে এলাকাবাসীর খেদমত করেছি। নানাভাবে এলাকার উন্নয়নে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছি। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এলাকার মানুষ আমাকে ভোট দেবেন।’
নির্বাচন কর্মকর্তা মো, জসীম উদ্দিন বলেন, ‘ফেনী সদর উপজেলার ৪১ কেন্দ্রকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সে তালিকায় লেমুয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডও রয়েছে। এসব কেন্দ্রে কোনো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো নিজাম উদ্দিন জানান, ‘নির্বাচনী এলাকায় বহিরাগতের আনাগোনা দেখলে তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করতে প্রার্থী ও সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসন থেকে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করা হয়েছে।’
নুর উল্লাহ কায়বার/আরএইচ/এএসএম