কক্সবাজারে স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে পর্যটককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
স্বামী-সন্তান নিয়ে কক্সবাজারে বেড়াতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ। শহরের লাবণী পয়েন্ট থেকে তুলে নিয়ে স্বামী-সন্তানকে জিম্মি ও হত্যার ভয় দেখিয়ে তাকে একাধিকবার সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করেন তিন যুবক।
খবর পেয়ে কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোনের জিয়া গেস্ট ইন নামের হোটেল থেকে বুধবার রাত দেড়টার দিকে তাকে উদ্ধার করে র্যাব-১৫।
ভুক্তভোগী ওই নারী সাংবাদিকদের জানান, বুধবার সকালে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজারে বেড়াতে আসেন। ওঠেন শহরের হলিডে মোড়ের একটি হোটেলে। বিকেলে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে যান। সেখানে অপরিচিত এক যুবকের সঙ্গে তার স্বামীর ধাক্কা লাগলে কথাকাটাকাটি হয়। এর জেরে সন্ধ্যার পর পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে তার ৮ মাসের সন্তান ও স্বামীকে সিএনজি অটোরিকশায় করে কয়েকজন তুলে নিয়ে যায়।
‘এ সময় আরেকটি সিএনজি অটোরিকশায় তাকে তুলে নেয় তিন যুবক। পর্যটন গলফ মাঠের পেছনে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে তিনজন। এরপর তাকে নেয়া হয় জিয়া গেস্ট ইন নামে একটি হোটেলে। সেখানে ইয়াবা সেবনের পর আরেক দফা তাকে ধর্ষণ করেন ওই তিন যুবক। ঘটনা কাউকে জানালে সন্তান ও স্বামীকে হত্যা করা হবে জানিয়ে রুম বাইরে থেকে বন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তারা ‘
ওই নারী আরও জানান, জিয়া গেস্ট ইনের তৃতীয় তলার জানালা দিয়ে এক যুবকের সহায়তায় কক্ষের দরজা খোলেন তিনি। তারপর ফোন দেন ৯৯৯-এ। পুলিশ তাকে থানায় সাধারণ ডারেরি করার পরামর্শ দেয়।
তারপর পাশের একজনের সহযোগিতায় কল দেন র্যাবকে। তারা এসে তাকে উদ্ধার করে। তার স্বামী ও সন্তানকে উদ্ধার করা হয় পর্যটন গলফ মাঠ এলাকা থেকে।
ভুক্তভোগীর স্বামী বলেন, সামান্য ধাক্কা লাগার কারণে তারা আমার এত বড় ক্ষতি করলো? অপরিচিত বলে শহরের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গেলেও সেসব জায়গা ও দুর্বৃত্তদের চিনতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, বারবার হাতে-পায়ে ধরলেও তারা আমার স্ত্রীকে ফেরত দেয়নি। বেড়াতে এসেছিলাম বেতন পেয়েছি সেই খুশিতে। এখন স্ত্রীর অবস্থা ভালো নয়, তাকে নিয়ে চিন্তায় আছি।
কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর সিপিসি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান বলেন, খবর পেয়ে স্বামী-সন্তান ও গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়। ছায়া তদন্ত শুরু করেছি, এখন পর্যন্ত তিনজনের মধ্যে দুজনকে শনাক্ত করা গেছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে।
কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর লে. কর্নেল খায়রুল ইসলাম সরকার বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, তাদের কঠোর শাস্তি পেতে হবে। বিষয়টি নিয়ে অধিকতর তদন্ত চলছে। মামলার বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন।
এই বিষয় সম্পর্কে জানতে কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গীয়াসের সরকারি মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হয়। রিং হলেও ফোন না ধরায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
সায়ীদ আলমগীর/এফএ/এএসএম