২ কোটি টাকায় সড়ক সংস্কার, দুই মাসের মাথায় ভাঙন
নাটোর সদর উপজেলার বেলঘড়িয়া-মমিনপুর রাস্তাটি দুই কোটি ১১ লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে সংস্কার হয়েছে। তবে সংস্কারের দুই মাসের মাথায় সড়ক থেকে পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও রাস্তা দেবে গেছে। দেখা দিয়েছে ফাটলও।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় সড়কের এমন অবস্থা হয়েছে। এতে সরকারের টাকা অপচয় করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বেলঘরিয়া থেকে মমিনপুর পর্যন্ত ৮ কিলোমিটারের বেশি রাস্তাটি সংস্কারের জন্য গত অর্থবছরে (২০২০-২১) টেন্ডার আহ্বান করা হয়। ঠিকাদারি সংস্থা সরকার কনস্ট্রাকশন টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি পায়। টেন্ডারে রাস্তার দুপাশে যে ভাঙন দেখা দিয়েছে, তাতে পিচঢালাইয়ের কথা বলা হয়েছে।
কিন্তু সরজমিনে সরেজমিনে ৮ কিলোমিটার রাস্তার বেলঘরিয়া থেকে ছাতনী স্লুইচগেট পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায়, কোথাও কোথাও পিচ কার্পেটিং করা হয়নি। যেখানে করা হয়েছে সেসব জায়গায় আবার ফাটল দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আবার কোথাও পুরোপুরি পিচঢালাই উঠে গেছে।
আব্দুর রাজ্জাক রাজু নামে এক সাবেক সেনা সদস্য বলেন, রাস্তায় নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করা হয়েছে। ফলে দুমাস হওয়ার আগেই রাস্তাটি ভেঙে পিচ ঢালাই উঠে যাচ্ছে। এ নিয়ে চার-পাঁচদিন আগে প্রতিবাদ করতে গেলে আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়েছে। আমি এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হাকিম, রশিদ সরকার, সিদ্দিক এবং মমিন আলী বলেন, মাত্র দুই মাস আগে রাস্তাটি সংস্কার করা হয়েছে কিন্তু এর মধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় পিচঢালাই উঠে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও দেখা দিয়েছে বড় ধরনের ফাটল। রাস্তার দুপাশে ভাঙন প্রতিরোধের জন্য মাটি ফেলারও কথা ছিল। কিন্তু তড়িঘড়ি করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি সম্পন্ন করে।
সাবেক ইউপি মেম্বার হেলাল উদ্দিন সরকার বলেন, রাস্তাটির সংস্কার মানসম্পন্ন হয়নি। পিচ ঢালাইয়ে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সরকার কনস্ট্রাকশনের ব্যবসায়িক পার্টনার আশফাকুল ইসলাম বলেন, রাস্তায় কোনো নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি। বর্ষার সময় মাটির সঙ্কট দেখা দেয়। আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে মাটি সংগ্রহ করার পর পিচ ঢালাই করেছি।
তিনি বলেন, ওভারলোডেড পরিবহন রাস্তায় চলাচল করায় ফাটল ও গর্ত হয়েছে। আমরা সেগুলো পুনরায় সংস্কার করে দিয়েছি। আর কোনো ধরনের সমস্যা দেখা দিবে না।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী শহীদুল হক জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি জানার পরই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ভেঙে যাওয়া জায়গায় সংস্কার করতে বলা হয়েছে। তারা সংস্কার করে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মেইনটেনেন্সের আওতায় এক বছর অর্থাৎ ৩৬৫ দিন তাদের হাতে আছে। রাস্তার কোথাও কোনো খারাপ বা কোনো গর্ত সৃষ্টি হলে বা ভেঙে গেলে তা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সংস্কার করতে বাধ্য। আমরা বিষয়টি তদারকি করে দেখছি।
রেজাউল করিম রেজা/এসজে/জেআইএম