গ্রাহকদের কয়েক কোটি টাকা নিয়ে সমবায় সমিতি উধাও
বগুড়ার সারিয়াকান্দি থেকে কয়েক কোটি টাকা লোপাট করে উধাও হয়েছেন বাঁধবাসী একতাবদ্ধ শ্রমজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের পরিচালকরা। সমিতির সদস্যরা ঘুরছেন বিভিন্ন অফিস এবং প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সারিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের দীঘলকান্দি ৬ মাথার মোড়ে বাঁধবাসী একতাবদ্ধ শ্রমজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড নামে একটি সমিতি স্থাপিত হয় ২০০৪ সালে। উপজেলার পৌর এলাকাসহ বাইরের বিভিন্ন ইউনিয়নে তারা তাদের সমিতির সদস্য অন্তর্ভুক্ত করে। তাদের সমিতির সদস্য সংখ্যা ৬শর বেশি।
সদস্যদের কাছ থেকে তারা বিভিন্ন সময় মাসিক সঞ্চয় ও সাপ্তাহিক সঞ্চয়ের কথা বলে টাকা উত্তোলন করতেন। কয়েকদিন ধরে সমিতির পরিচালকসহ স্টাফদের কাউকেই আর পাওয়া যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে সমিতির সদস্য পৌর এলাকার হিন্দুকান্দি গ্রামের মৃত মফছের আলীর ছেলে শমশের আলী (৬২) সারিয়াকান্দি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
তার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সদর ইউনিয়নের দীঘলকান্দি গ্রামের খোরশেদ আলী, টুকু মিয়া, জহির রায়হান, রহিম মিয়া এবং মিঠু মিয়া ওই সমবায় সমিতি খুলে তার কাছ থেকে দীর্ঘ কয়েক বছরে ১৮ লাখ ২১ হাজার ৫০০ টাকা নিয়েছেন। বর্তমানে তাদের কাউকেই এখন তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না।
পৌর এলাকার চা দোকানি লিচু মিয়া জানান, তার ওই সমিতিতে ৭ লাখ টাকার বেশি জমা আছে।
সদর ইউনিয়নের পারতিত পরল গ্রামের রতন মিয়ার স্ত্রী সঞ্চিতা বেগম বলেন, আমার স্বামী রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। অনেক কষ্টে আমাদের সংসার চলে। মানুষের বাড়ি থেকে পানি নিয়ে এসে খাই। বাড়িতে টিউবওয়েল বসানের জন্য ওই সমিতিতে গত বছর থেকে দুই নামে দৈনিক ৫০ টাকা করে জমা করছি। সর্বমোট ৩১ হাজার টাকা জমা হয়েছে। সমিতি হারানোর কথা শুনে আমার সংসারে নানা ধরনের অশান্তি হচ্ছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলার সাবেক সমবায় অফিসার সালাহউদ্দিন সিদ্দিকী জানান, সমিতিটি আমি থাকাকালীন আমাদের সমবায় রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত হয়েছে। তাদের বিভিন্ন অনিয়মের জন্য ইতোপূর্বেও নোটিশ দেয়া হয়েছিল।
সারিয়াকান্দি পৌরসভার মেয়র মতিউর রহমান মতি জানান, বিষয়টি নিয়ে প্রতিনিয়ত শত শত সদস্য আমার কাছে অভিযোগ নিয়ে আসছে। অসহায়দের টাকা ফিরিয়ে দিতে আমি তাদের আশ্বস্ত করেছি এবং এ বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি।
সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। মানবিক দিক বিবেচনায় সমিতির অসহায় সদস্যদের টাকা উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এফএ/এমএস