‘স্ত্রীর স্বীকৃতি না পেলে মরে যাবো’
‘স্ত্রীর স্বীকৃতি না পেলে মরে যাবো’ সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে দুদিন ধরে মিছবাহুজ্জামান রুহিন নামে এক থাই মিস্ত্রির বাসার সামনে অবস্থান নিয়েছেন তরুণী।
সিলেট নগরের কালীবাড়ির বাসিন্দা মো. আবু হানিফের ছেলে মিছবাহুজ্জামান রুহিনকে স্বামী দাবি করে তার বাসার সামনে অবস্থান নেন তিনি। তরুণীর বাড়ি চাঁদপুরে।
স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলাও করেছেন তরুণী। মামলাটি বর্তমানে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করছে।
শনিবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে ওই তরুণী জাগো নিউজকে বলেন, ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে মিছবাহুজ্জামান রুহিনের সঙ্গে দীর্ঘদিন আগে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। আট মাস আগে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে আমরা দুজন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। আমাকে নারায়ণগঞ্জের একটি ভাড়া বাসায় রেখে সিলেটে থেকে কিছুদিন পর পর গিয়ে সেখানে থাকতো রুহিন। এভাবে সাত মাস একসঙ্গে সংসার করার পর হঠাৎ রুহিন যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
তরুণী অভিযোগ করে বলেন, রুহিন আমাকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নিচ্ছে না। এড়িয়ে চলছে। ১০-১২ দিন আগে সিলেটে তার বাসায় গেলে লোকজনের সামনে আমাকে তারা মারধর করে। স্থানীয় সিটি কাউন্সিলরকে এ ব্যাপারে অবহিত করলে তিনি বিচার করে দেবেন বলে আশ্বাস দেন। তবে এখনো আমি কোনো বিচার পাইনি।
রুহিন এর আগেও জাল কাগজ তৈরি করে একাধিক নারীর সঙ্গে বিয়ের প্রতারণা করেছেন জানিয়ে তরুণী বলেন, এরপরও আমি তাকে ভালোবেসেছি। রুহিনকে আমি চাই। এজন্য স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) থেকে রুহিনের বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়েছি। কিন্তু রুহিন লাপাত্তা। শনিবার দুপুর থেকে ফের অনশন শুরু করি। সন্ধ্যার দিকে পুলিশ বাসার সামনে থেকে থানায় নিয়ে গিয়ে বলেছে তারা বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দেবে। যদি রুহিনকে আমি না পাই তাহলে আবার অনশন শুরু করবো।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রুহিনের বক্তব্য জানতে তার মোবাইল নম্বরে কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইলিয়াছুর রহমান বলেন, কয়েকদিন আগে এক তরুণী এসেছিলেন বিচার চাইতে। আমরা বলেছি কাবিননামা বা উপযুক্ত প্রমাণ নিয়ে আসতে। এরপর তিনি চলে যান।
কাউন্সিলর আরও বলেন, বর্তমানে আমি সিলেটের বাইরে আছি। তাই রুহিনের অনশনের বিষয়ে কিছু জানি না।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের জাগো নিউজকে বলেন, এ ঘটনায় ঢাকায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেছেন তরুণী। মামলাটি বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে। আমরা ঢাকার পিবিআইর তদন্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, সিলেটে ছেলের বাড়ি হওয়ায় ওই নারী ছেলেটির বাসার সামনে অবস্থান নিয়েছেন। স্থানীয়ভাবে তার নিরাপত্তার বিষয়টি পুলিশের নজরে আছে। অথবা তিনি আমাদের কাছে কোনো আইনি সহয়োগিতা চাইলে আমরা তাকে সহযোগিতা করবো।
ছামির মাহমুদ/এসজে/জেআইএম