ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

কারাগারে আ’লীগ নেতার ছেলে, বিপাকে কিশোরীর পরিবার

জেলা প্রতিনিধি | ব্রাহ্মণবাড়িয়া | প্রকাশিত: ১০:৫০ এএম, ১৫ নভেম্বর ২০২১

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা ও তার ছেলের বিরুদ্ধে কিশোরী অপহরণের মামলা করে বিপাকে পড়েছে এক পরিবার। ছেলেকে জেল থেকে ছাড়িয়ে আনতে ওই কিশোরীর পরিবারকে একের পর এক হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। হুমকি-ধমকিতে ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবারের সদস্যদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

কিশোরীর বাসার পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সামাজিকভাবেও হয়রানি করা হচ্ছে তাদের। অপহরণের পর পুলিশের উদ্ধার করা কিশোরীকে অন্যত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন তার পরিবার।

কিশোরীর পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও শহরের কাউতলি এলাকার পূর্বপাড়ার বাসিন্দা সেলিম রেজা হাবিবের ছেলে তোফায়েল আহমেদ একই এলাকার ১৪ বছরের এক কিশোরী স্কুলে যাওয়া-আসার সময় উত্ত্যক্ত করতো। বিষয়টি ওই কিশোরীর বাবা তোফায়েলের পরিবারকে জানালে এতে সে ক্ষিপ্ত হয়। পরে গত ১৭ আগস্ট দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তোফায়েল স্বজনদের সহযোগিতায় ওই কিশোরীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেয় কিশোরীর পরিবার। পরে ২০ আগস্ট তোফায়েল ও তার বাবা সেলিম রেজা হাবিব, তিন ভাই জুয়েল, রাসেল ও সেন্টু, চাচি মনজু আরা বেগম এবং চাচাতো ভাই শাকিলের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

এ মামলায় ১ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন তোফায়েল ও তার স্বজনরা। ওইদিন আসামিরা অপহৃত কিশোরীকেও তাদের সঙ্গে আদালতে নিয়ে যান। পরে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে পুলিশ। এদিকে গত ৩০ সেপ্টেম্বর তোফায়েল ও তার চাচাতো ভাই শাকিল এবং চাচি মনজু আরা বেগমকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল মুত্তালিব। নিম্ন আদালতে সব আসামি হাজির হলে সবাইকে জামিন দিলেও তোফায়েলকে কারাগারে পাঠান আদালত।

এদিকে কারাগারে থাকা ছেলেকে রক্ষা করার জন্য মরিয়া উঠেছেন আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম। দলীয় প্রভাবে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে বিষিয়ে তুলেছেন ওই কিশোরী ও তার পরিবারের সদস্যদের জীবন। প্রতিনিয়ত তাদের মামলা তুলে নিয়ে আপস করার জন্য হুমকি-ধমকি এবং সামাজিকভাবে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন কিশোরীর বাবা। তাদের বাসার পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ারও অভিযোগ করেন তিনি। হুমকির ঘটনায় থানায় জিডিও করা হয়েছে। তারপরও সেলিমের অন্য তিন ছেলে জুয়েল, সেন্টু ও রাসেল নানাভাবে বাদীকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।

মামলার বাদী ওই কিশোরীর বাবা জানান, মামলার পর একের পর এক হুমকিতে আছি। সেলিম রেজা হাবিবের ছেলেরা আমাকে হুমকি দিয়ে আসছেন। রোববার সকালেও আমার ওপর হামলার চেষ্টা করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আমি কাউতুলী বাজারে সবজি কিনতে যাই। সেখানে সেলিম রেজা হাবিবের বড় ছেলে সেন্টু এসে আমার পায়ে পা দেন। আবার নিজেই বলে আমি তাকে পায়ে পা দিয়েছি। বিষয়টি দেখে দোকানদারা প্রতিবাদ করেন। পরে দলবল নিয়ে বাজারের ভেতরে আমার ওপর হামলা করতে চাই দোকানদার ও অন্যান্যরা প্রতিহত করে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম রেজা হাবিব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার ছেলে এখনো জেলহাজতে আছে। এ সময়ে আপস মীমাংসার জন্য চাপ দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া মডেল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মুত্তালিব জানান, আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছি। ভিকটিমের ২২ ধারা জবানবন্দি ও তদন্ত অনুযায়ী যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে তাদের চার্জশিটে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

আবুল হাসনাত মো. রাফি/আরএইচ/জিকেএস