জোয়ারে তলিয়ে ভাটায় ভাসে নৌ অ্যাম্বুলেন্স
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে আছে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার নৌ অ্যাম্বুলেন্স। চরবাসীর জরুরি স্বাস্থ্যসেবার জন্য এ নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি দেওয়া হলেও তা অচল হয়ে বর্তমানে কলাপাড়া পৌর শহরের হ্যালিপ্যাড মাঠের পূর্ব পাশে আন্ধারমানিক নদীর কিনারে পড়ে আছে।
ভেতরে ময়লা-আবর্জনা জমে এটি এখন নষ্ট হওয়ার পথে। ‘এটা ব্যবহার উপযোগী না’ বলে কর্তৃপক্ষ এখন এটি অন্য কোথাও হস্তান্তরের চেষ্টা করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সমুদ্র উপকূলের দূরবর্তী মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে উপহার হিসেবে অ্যাম্বুলেন্সটি পাওয়ার প্রায় এক বছর পার হলেও সেটি এখনো ব্যবহারই করা হয়নি। এটি নদীর জোয়ারে তলিয়ে থাকে আবার ভাটার সময় ভেসে থাকে। এটি রক্ষণাবেক্ষণ করা না হলে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
পরিবেশ নিয়ে কাজ করা উপজেলার চাপলী এলাকার বাসিন্দা কামাল হাসান রনি জাগো নিউজকে বলেন, আমরা যারা উপজেলা শহর থেকে দূর্গম এলাকায় বাস করি তাদের এটা খুবই প্রয়োজন। এছাড়া কলাপাড়ার অভ্যন্তরীণ ইউনিয়নগুলোর সাথে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব খারাপ। ইউনিয়নের অসুস্থ রোগীদের জরুরি সেবা নিতে হলে কলাপাড়া হাসপাতালে যেতে হয়। সেক্ষেত্রে নৌ অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে এই সুবিধা দেয়া সম্ভব।
তিনি আরও জানান, এটা যদি ফেলে না রেখে এর সেবা চালু করা যেত তাহলে সাধারণ মানুষের জন্য অনেকটা উপকারে আসত। শুধু উপকারেই আসত না প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এই উপহারের যথার্থ সম্মানও দেয়া হত।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কলাপাড়া জোনের সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন মাননু বলেন, এই নৌ অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে রোগী পরিবহন করা হয়নি কখনোই। এটা রোদ আর বৃষ্টিতে অকেজো হয়ে যাচ্ছে। এটা মূলত উপজেলার দূর্গম এলাকার মানুষকে জরুরি চিকিৎসা দেয়ার জন্য সরকার পাঠালেও স্বাস্থ্য বিভাগ কোনো প্রকার দেখভাল না করে ফেলে রেখেছে। এমনকি তাদের কাছে গেলেও সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিন্ময় হাওলাদার জাগো নিউজকে জানান, বর্তমানে উপজেলার সকল জায়গায় যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত, এখন এটা ব্যবহারের প্রয়োজন নাই। কোথাও কেউ অসুস্থ হলে নৌ-এম্বুলেন্স পাঠিয়ে তাকে বহন করে নিয়ে আসার কম সময়ে রোগীরা এখন পৌঁছে যাচ্ছে। তাই এটা আমাদের দরকার হয় না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এটাকে সারিয়ে নিয়ে অন্য কোথাও দেয়ার জন্য কয়েকবার বলা হয়েছে কিন্তু তারা এখনো কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
আসাদুজ্জামান মিরাজ/এফএ/এমএস