ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকতা ছেড়ে মাল্টা চাষে সফল আলাউদ্দিন

জেলা প্রতিনিধি | শরীয়তপুর | প্রকাশিত: ০৪:৫০ পিএম, ১৬ অক্টোবর ২০২১

আলাউদ্দিন মিয়া (৫০)। বাড়ি শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়ায়। আগে ঢাকার একটি কিন্ডারগার্টেনে শিক্ষকতা করতেন। কিন্তু শিক্ষকতার বেতন দিয়ে তার সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়তো। এ অবস্থায় সামাজিক মাধ্যম ইউটিউবে মাল্টা চাষ ও লেবু বাগান করার ভিডিও দেখে অনুপ্রাণিত হন তিনি।

এরপর গ্রামে ফিরে শুরু করেন মাল্টা চাষ। এতেই স্বাবলম্বী হয়ে ওঠেন তিনি। তার দেখাদেখি ওই এলাকার অনেকেই এখন মাল্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। আলাউদ্দিন মিয়া জেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের মাছুয়াখালি গ্রামের মৃত আলহাজ মো. আমজাদ হোসেনের ছেলে।

মাল্টা চাষ করে স্বাবলম্বী আলাউদ্দিন মিয়ার সঙ্গে কথা হয় জাগো নিউজের। তিনি জানান, ঢাকার একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে তিনি শিক্ষকতা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। চাকরি ছেড়ে সিদ্ধান্ত নেন গ্রামের বাড়ি ফিরে কৃষিকাজ করবেন। ইউটিউবে দেখে গ্রামে ফিরে শুরু করেন মাল্টা চাষ, তৈরি করেন লেবু বাগান। পরিবারের সদস্যরাও তাকে উৎসাহিত করেন ।

jagonews24

তিনি জানান, ২০১৮ সালে ১৩০ শতাংশ জমিতে প্রথমে ১২০টি মাল্টার চারা রোপণ করেন তিনি। এছাড়াও ১৫০টি লেবু গাছ দিয়ে একটি বাগান তৈরি করেন। বাগান নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি ফলের উপযোগী কাজের প্রচেষ্টা চালিয়ে যান। এতেই গাছে আসা শুরু করে ফল। তার বাগানে বর্তমানে প্রতিটি গাছ থেকে ২০০ থেকে ৩০০ মাল্টা পাচ্ছেন তিনি। এই মাল্টা বিক্রি করে তিনি সংসারের খরচ চালিয়ে অতিরিক্ত টাকা জমাতে পারছেন।

আলাউদ্দিন বলেন, অল্প খরচে লাভ বেশি। তাই শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়ে কৃষি কাজের ওপর নির্ভরশীল হই। মাল্টা ও লেবু চাষ করে বছরে ১০ লাখ টাকা আয় করেন বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, বাগানে মাতৃগাছ থেকে বাকল দিয়ে ‘গ্রাফটিং’ করে চারা উৎপাদন করা হয়। চারা রোপণের এক বছরের মধ্যে লেবু ও দুই বছরের মধ্যে মাল্টার ফলন শুরু হয়। বর্তমানে আমার বাগান পরিচর্যার জন্য দুইজন লোক কাজ করেন। আমার দেখাদেখি এলাকার অনেক বেকার যুবক মাল্টা-লেবু বাগান করে বেকারত্ব দূর করছেন বলে জানান তিনি।

jagonews24

বর্তমানে তার লেবু ও মাল্টা নিজ এলাকা ছাড়িয়ে শরীয়তপুরের বিভিন্ন উপজেলা ও চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন বাজারে পৌঁছে গেছে। দূর-দূরান্তের ব্যবসায়ীরা তার বাগানের লেবু ও মাল্টা কিনে নিয়ে বিক্রি করেন। বাগান থেকে ব্যবসায়ীরা পাইকারি কেজিপ্রতি মাল্টা ১২০ টাকা ও ৮০ পিস লেবু ৩০০ টাকা দরে কিনে থাকেন।

স্থানীয় আব্দুল হক সরদার, তাইজুল মাদবর, মহিউদ্দিন মাদবর বলেন, বাজার থেকে মাল্টা কিনে খেয়েছি। তার তুলনায় এখানকার নতুন বাগানে চাষ করা মাল্টার স্বাদ বেশি ভালো ও মিষ্টি বলে মনে হয়েছে। এছাড়াও তার বাগানের লেবু কিনেছি, খাঁটি লেবু।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আব্দুস সাত্তার বলেন, আলাউদ্দিনের মাল্টা ও লেবু বাগানের খোঁজখবর নিয়েছি। তার উৎপাদিত মাল্টা আকারে বড় ও মিষ্টি। তাছাড়া তিনি লেবু চাষেও বেশ সফল। তিনি কৃষি কার্যালয়ের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখেন। তার দেখাদেখি এলাকার অনেক বেকার যুবক মাল্টা ও লেবু বাগান করে বেকারত্ব দূর করছেন বলে জানান তিনি।

মো. ছগির হোসেন/এআরএ/এএসএম