ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

বিএনপি মাঠে থাকলেও আ.লীগ নেতারা ঘরে

প্রকাশিত: ০৮:৫০ এএম, ২২ ডিসেম্বর ২০১৫

নীলফামারীর সৈয়দপুরে পৌরসভা নির্বাচন জমে উঠেছে। বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় নেমেছেন স্থানীয় নেতাসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। কিন্তু মাঠে কোথাও প্রচারণায় দেখা যাচ্ছে না আওয়ামী লীগের কোনো সারির নেতাদের।

এতে ভোটের ফলাফলে প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন ভোটাররা। সরেজমিনে দেখা গেছে, পৌর আসনে বসতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী অধ্যাপক সাখাওয়াৎ হোসেন খোকন। তিনি নৌকার পক্ষে সব ধরনের জোর প্রচারণা চালালেও স্থানীয় প্রথম শ্রেণির আওয়ামী লীগ নেতারা প্রচারণায় বিমুখ হয়ে ঘরে বসে আছেন বলে জানান বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী।

শুধু তাই নয় তারা আরও জানান, গোপনে ধানের শীষ প্রতীকে সাবেক মেয়র বিএনপির সর্মথক আমজাদ হোসেন ভজেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা গোপনে সহযোগিতা করছেন। অন্যদিকে, সাধারণ জনগণ অনেকটাই খোলা মনে বলছেন ধানের শীষ মার্কায় আমজাদ হোসেন ভজে তিনবার মেয়র পদে নির্বাচিত হলেও পৌর এলাকার উন্নয়ন চোখে দেখার মতো হয় নাই। সাধারণ ভোটাররা আরও বলেন, এবার আমরা নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে দাবির সঙ্গে এলাকার উন্নয়ন ঘটাতে চাই। এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নৌকা ও ধানের শীষে হাড্ডিহাড্ডি লড়াই হবে বলে ভোটাররা জানাচ্ছেন।    

উত্তরের ব্যবসা বাণিজ্য সমৃদ্ধ নীলফামারীর প্রথম শ্রেণির সৈয়দপুর পৌরসভা ১৯৫৮ সালে ৩৪/১৩ র্বগকিলোমিটার আয়তনের ১৫টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ পৌরসভার নির্বাচনী প্রচারণা নানা রঙয়ের ব্যানার ফেস্টুনে জমে উঠেছে। এখানে বাঙালি-বিহারি ও মিশ্র ভাষাভাষির মানুষ বসবাস করেন। নির্বাচনের জয়ের মুকুট যেন পড়তে পারেন আর এ কারণে বাংলার পাশাপাশি ঊর্দূতে চলছে প্রচারণা। ভোটার তালিকার হালনাগাদ অনুযায়ী, সৈয়দপুর পৌর এলাকায় মোট ভোটার সংখ্যা ৮১ হাজার ৩৬৫ জন। এর মধ্যে ৪০ হাজার ৮৫২ জন পুরূষ ও ৪০ হাজার ৫১৩ জন নারী ভোটার রয়েছেন। ভোটারদের মধ্যে উর্দুভাষী ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৩৮ হাজার। ফলে উর্দুভাষী ভোটারকে একটি বড় নিয়ামক বলে মনে করেন সচেতন ভোটাররা।

স্বাধীনতার পর যতগুলো নির্বাচন হয়েছে সবকটি নির্বাচনই উর্দুভাষী ভোটাররা প্রার্থীর জয়-পরাজয়ে বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করেছে। ভোট ব্যাংক হিসেবে পরিচিত এসব মানুষকে পক্ষে নেয়ার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন দু`দলের সর্মথকরা। ফলে প্রচার-প্রচারণা বাংলার পাশাপাশি উর্দুতে চলছে। শহরের আটকেপড়া পাকিস্তানি ২২টি ক্যাম্পের বাসিন্দা টার্গেট করে এগিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থনে নারী-পুরুষের আলাদা আলাদাভাবে ভোট সংগ্রহ টিম প্রতিটি ভোটারের বাড়ি বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন।

পৌরসভার মেয়র পদে মোট চারজন দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করছেন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী অধ্যাপক সাখাওয়াৎ হোসেন খোকন (নৌকা), বিএনপির অধ্যক্ষ আমজাদ হোসেন সরকার (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির জয়নাল আবেদীন (লাঙ্গল) ও ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী হাফেজ নূরুল হুদা (হাত পাখা)।

বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়ক ও শেরেবাংলা সড়ক এবং শহীদ সামসুল হক রোডে প্রচারণা চালান বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি বিলকিস ইসলাম, সদস্য আক্তারুজ্জামান মিয়া, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান এসময় জাগো নিউজকে বলেন, সারাদেশে ধানের শীষের জোয়ার উঠেছে। শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপির প্রার্থীরা অবশ্যই জয়লাভ করবে।

তৃণমূলকে উজ্জীবিত করার জন্য কেন্দ্রীয় টিম কাজ করছে বলে জানান তিনি। অন্যদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রবীণ নেতা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সৈয়দপুরের প্রথম সারির আওয়ামী লীগ নেতারা দিনের বেলায় আওয়ামী লীগ নেতা সেজে থাকেন এবং রাতের বেলায় বিএনপির উপদেষ্টার আসনে বসে থাকেন। এ নেতাদের কাছে দেশ কতটুকু নিরাপদ থাকবে।
 
জাহেদুল ইসলাম/এমজেড/এমএস