ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

উপহারের ঘরের জন্য টাকা নেওয়ার অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

জেলা প্রতিনিধি | সিরাজগঞ্জ | প্রকাশিত: ০৭:৫৭ পিএম, ০৪ অক্টোবর ২০২১

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দেওয়ার কথা বলে আটজনের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার সোনাখাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা কামাল রিপনের বিরুদ্ধে। তবে টাকা দেওয়ার চার বছরেও ঘর পাননি তারা। সুদে নেওয়া টাকা চেয়ারম্যানকে দিয়ে এখন পড়েছেন বিপাকে। টেনেই চলছেন সেই সুদের টাকা।

এ নিয়ে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে জেলা প্রশাসকের কাছে ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. মোস্তফা কামাল রিপনের বিরুদ্ধে সরকারি ঘর দেওয়ার নামে অর্থ আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ দেন ওই আট ভুক্তভোগী।

এরা হলেন- সোনাখাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার আব্দুল মজিদ, হিজলী খাতুন, সূর্য খাতুন, জরিনা খাতুন, রেজাউল করিম, শেফালী ও লায়লী খাতুন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোনাখাড়া ইউনিয়নের গোতিথা গ্রামের বাসিন্দা হতদরিদ্র মো. আব্দুল মজিদ ২০১৭ সালে হতদরিদ্রদের জন্য সরকারিভাবে দেওয়া একটি ঘরের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. মোস্তফা কামাল রিপনের কাছে যান। এ সময় তাকে ঘর পাইয়ে দেওয়ার জন্য ১৭ হাজার টাকা দিতে বলেন চেয়ারম্যান। টাকা দিতে এলাকার এক মহাজনের কাছ থেকে সুদে ১৭ হাজার টাকা জোগাড় করে এনে চেয়ারম্যানের হাতে তুলে দেন।

এরপর থেকেই চেয়ারম্যান তাকে ঘর দেবেন বলে আজকাল করে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। এভাবে চার বছর কেটে গেলেও আজও সরকারি ঘর আর জোটেনি তার কপালে। শুধু তিনি নন, তার মতো আরও সাতজন চেয়ারম্যানকে টাকা দিয়ে এখন পথে বসেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

শেষ পর্যন্ত সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে জেলা প্রশাসক বরাবর তারা লিখিত অভিযোগ দেন। পরে জেলা প্রশাসক রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বললেও এখনো আলোর মুখ দেখেনি কেউ।

ভুক্তভোগী আব্দুল মজিদ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার কতো গরিব মানুষকে ঘর দিয়েছে। কিন্তু আমি একটি ঘর পাওয়ার আশায় চার বছর আগে মহাজনের কাছ থেকে সুদে ১৭ হাজার টাকা এনে চেয়ারম্যানকে দিয়েছি। ১৭ হাজার টাকায় প্রতি মাসে এক হাজার ৭০০ টাকা করে সুদ দিতে হয়। সুদ বেড়ে এখন ৫১ হাজার টাকা হয়েছে। আজও ঘর পেলাম না। মহাজনের টাকা কীভাবে পরিশোধ করবো এ ভেবে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছি।

একই অভিযোগ করে সোনাখাড়া গ্রামের মৃত মহরব আলীর স্ত্রী হিজুলি খাতুন বলেন, চেয়ারম্যান আমাকে ঘর দেওয়ার কথা বলে ২০ হাজার টাকা নিয়েছেন। আমি একজন অন্ধ মানুষ। কীভাবে আমার দিন যাবে। টাকাও পেলাম না, ঘরও পেলাম না। এদিকে আমাকে ওই টাকার সুদ দিতে হয় প্রতি মাসে।

স্থানীয় এক স্কুলশিক্ষক বলেন, জেলা প্রশাসক বরাবর এমন অভিযোগ আটজন করলেও ভুক্তভোগী অসংখ্য। কারণ চেয়ারম্যানের ভয়ে তারা মুখ খুলতে সাহস পান না।

অভিযুক্ত সোনাখাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু হেনা মো. মোস্তফা কামাল রিপন জাগো নিউজকে বলেন, আমি আবারও সরকারদলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী। জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে আমার প্রতিপক্ষের লোকজন মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে।

এ বিষয়ে রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাজিবুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, ভুক্তভোগীরা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করলে আমাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। পরে আমি সাক্ষ্য প্রমাণসহ শুনানি করে এরই মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছি। দু-একদিনের মধ্যে জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতিবেদনটি দাখিল করা হবে।

ইউসুফ দেওয়ান রাজু/এসজে/এমএস