সিসিটিভি ফুটেজে ছাত্রদের চুল কাটার ‘প্রমাণ পেয়েছে’ তদন্ত কমিটি
সিসিটিভির ফুটেজ দেখে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের চুল কাটার ‘প্রমাণ পাওয়ার’ কথা জানিয়েছে তদন্ত কমিটি। বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) তদন্ত কমিটির সভাপতি এবং রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ আমাদের হাতে এসেছে। ফুটেজে শিক্ষার্থীদের চুল কাটার ঘটনার সত্যতা মিলেছে। আমরা তদন্ত কমিটির সদস্যরা মিলে এরই মধ্যে একাধিক বৈঠক করেছি। আশা করছি শুক্রবারের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিতে পারবো।
তদন্ত কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন কর্মকর্তা খান মো. আরমান শোভন, সদস্য হিসেবে আছেন অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান বরুণ চন্দ্র রায়, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান এবং সংগীত বিভাগের প্রভাষক ও প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্য রওশন আলম।
সিসিটিভি ফুটেজের একটি ক্লিপ জাগো নিউজের হাতে আসে। এতে দেখা যায়, কাঁচি হাতে এক নারী ক্লাসরুমে যাওয়া-আসা করছিলেন। তার পেছনে মধ্যবয়স্ক এক পুরুষকেও দেখা যায়। এর পাশে একজন জ্বর মাপার থার্মোমিটার দিয়ে শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা দেখছেন।
এদিকে, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে অভিযুক্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন তার ওপর অর্পিত অতিরিক্ত তিনটি পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
এরপরও সেই শিক্ষিকার স্থায়ী অপসারণ দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। অনশনরত অবস্থায় চার শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এদের মধ্যে একজনকে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিরিক্ত ভিসির দায়িত্বে থাকা ট্রেজারার আবদুল লতিফ বলেন, ঘটনা তদন্তে রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের বিভাগীয় চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেলকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এরই মধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষক তার দায়িত্বে থাকা তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তবুও শিক্ষার্থীরা তাকে অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করছে।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে ক্লাসে ফেরার জন্য চেষ্টা করছি। যেহেতু তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর অভিযোগ প্রমাণ হলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২৬ সেপ্টেম্বর দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিচিতি বিষয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় ১৪ ছাত্রের চুল কেটে দেন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। এর জেরে ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে এক ছাত্র অতিমাত্রায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ইউসুফ দেওয়ান রাজু/এসজে/জেআইএম