ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ ছাত্রের চুল কাটার অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে

জেলা প্রতিনিধি | সিরাজগঞ্জ | প্রকাশিত: ০৮:৪৭ এএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ জন ছাত্রের মাথার চুল কাঁচি দিয়ে কেটে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিচিতি বিষয়ের ফাইনাল পরীক্ষার হলে অংশগ্রহণের সময় শিক্ষার্থীরা এলে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযোগ উঠে, শিক্ষার্থীদের চুল কাটার নির্দেশ দেন ওই বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন একই বিভাগের সহকারী প্রক্টর রাজিব অধিকারী ও জান্নাতুল ফেরদৌস মুনি।

এ ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পরীক্ষা বর্জন করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করার জন্য বিসিক বাসস্ট্যান্ড এলাকার শাহজাদপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজে অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস-১ এর গেটে জড়ো হলে ওই শিক্ষকরা তাদের পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে পরীক্ষার হলে যেতে বাধ্য করেন।

লাঞ্ছিত একাধিক ছাত্র জানান, কয়েক দিন আগে ক্লাস চলাকালে ওই শিক্ষক চুল বড় রাখার বিষয়ে ছাত্রদের বকাঝকা করেন। তার ভয়ে সবাই পরদিনই চুল ছোট করেন। রোববার দুপুরে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিচিতি বিষয়ের চূড়ান্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীরা হলে ঢোকার আগে থেকেই দরজার সামনে ওই শিক্ষক কাঁচি হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। যাদের চুল মুঠোর মধ্যে ধরা গেছে, তাদের মাথার সামনের বেশ খানিকটা চুল তিনি কাঁচি দিয়ে কেটে দেন।

এ বিষয়ে ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত দ্যা ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লার প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. জামিনুর রহমান বলেন, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের এ ধরনের আচরণ শৃঙ্খলা পরিপন্থী ও একাডেমিক বিধিবহির্ভূত। এছাড়া শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত দেওয়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা পরিপন্থী।

তিনি আরও বলেন, করোনাকালে সবাইকে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে তিনি শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে গায়ে হাত দিয়ে স্বাস্থ্যবিধিও লঙ্ঘন করেছেন। আর শিক্ষার্থীদের মাথার চুল কেটে দিয়ে জঘন্য অপরাধ করেছেন। এরজন্য তার বিভাগীয় শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের সহকারী প্রক্টর জান্নাতুল ফেরদৌস মুনি বলেন, এটা তার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। এখানে আমরা হস্তক্ষেপ করতে পারি না। এছাড়া বিষয়টি ওই সময়ই মীমাংসা হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন বলেন, এ ধরনের কোনো বিষয় আমার জানা নেই। এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি তা বলছি না, তবে কয়েক দিন আগে কিছু ছাত্র আমার কাছে এসে পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে বলেছিল। আমি এতে রাজি হইনি। হয়তো বা সেই রাগে এ ধরনের অপপ্রচার চালিয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, অন্য বিভাগের ছাত্ররা মিথ্যা গুজব ছড়াতে ফেসবুকে এসব দিয়েছে। আমার বিভাগের কোনো ছাত্র দেয়নি। এটা একটা গুজব। আমার একটু রাগ বেশি ঠিক আছে। কিন্তু আমি কখনো কাউকে বকাঝকা করি না।

এ বিষয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এই প্রথম শুনলাম। এ ধরনের কোনো লিখিত অভিযোগও পাইনি। ভুক্তভোগীরা এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থগিত হওয়া পরীক্ষাগুলো নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া অন্য কোনো কার্যক্রম চালানো হচ্ছে না। সরকারের নিয়মের মধ্যেই এটা করা হচ্ছে। এতে সরকারি আদেশ অমান্য হয়নি।

ইউসুফ দেওয়ান রাজু/এসজে/জিকেএস