মির্জাপুরে বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি
করোনার কারণে দেড় বছরেরও বেশি সময় বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১২ সেপ্টেম্বর দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণায় শিক্ষার্থীরা খুশি হলেও মির্জাপুরের চিত্র ভিন্ন। কেননা উপজেলার বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকেছে বন্যার পানি। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে মির্জাপুর উপজেলার বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের রাস্তা ও মাঠে পানি উঠেছে। যে কারণে ১২ সেপ্টেম্বর উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা অনিশ্চিত বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, একটি পৌরসভা ও ১৪ ইউনিয়ন মিলে মির্জাপুরে ১৭০ প্রাথমিক, ৫৫ মাধ্যমিক, আট কলেজ, ১৪ মাদরাসা এবং তিনটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার পাঁচটি পাহাড়ি ইউনিয়ন আজচগানা, লতিফপুর, তরফপুর, বাঁশতৈল ও গোড়াই বাদে বাকি অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি ঢুকেছে। কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে ও রাস্তায় আবার কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পানি ঢোকার উপক্রম।
উপজেলার মুশুরিয়াগোনা, বহনতলী, ইচাইল, কুড়িপাড়া মধুরটেকি, রানাশাল ও হিলড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়া ৮৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পানি রয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা শিক্ষা অফিস।
আগামী কয়েক দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে নিম্নাঞ্চলের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আল মামুন।
উপজেলা সদরের আলহাজ শফি উদ্দিন মিঞা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মির্জাপুর মহিলা কলেজ, বরাটি নরদানা বাংলাদেশ উচ্চ বিদ্যালয়, পাথরঘাটা উচ্চ বিদ্যালয়, বন্দ্যে কাওয়ালজানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চাকলেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়, মির্জাপুর মহিলা কলেজ, মারিশন কামারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রানাশাল উচ্চ বিদ্যালয়, আটঘড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাইখার প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, বন্যার পানি বিদ্যালয়ের মাঠে থইথই করছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আগামী দু-তিনদিনের মধ্যে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকবে।
মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ইমরান হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান জানান, উপজেলার নিম্নাঞ্চলের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে পানি প্রবেশ করেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে কয়েকদিনের মধ্যে শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকবে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, পানি বৃদ্ধির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক জানানো হচ্ছে। শিশুদের জীবনের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বসহ দেখা হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ বলেন, সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে মির্জাপুরে ভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এস এম এরশাদ/এএইচ/এএসএম