গাছে ঝুলছিল নারীর মরদেহ, ‘জিনের ভয়ে’ কাছে যায়নি কেউ
বগুড়ার সোনাতলা থানার বালিয়াডাঙ্গা উত্তরপাড়া গ্রামের চারদিকে বন্যার পানি। এতে দাঁড়িয়ে আছে একটি গাছ। সেই গাছের ডালে ঝুলছে ইরিনা বেগম (৪৫) নামে এক নারীর মরদেহ।
খবর পেয়ে রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ইরিনা বেগম ওই এলাকার আনসার সদস্য সানোয়ার হোসেনের স্ত্রী। এ ঘটনার পর থেকে তার স্বামী পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, আনসার সদস্য সানোয়ার নওগাঁ জেলায় কর্মরত। দুই ছেলে ও এক ছেলের স্ত্রীকে নিয়ে ইরিনা বেগম গ্রামের বাড়ি বসবাস করেন। শনিবার সন্ধ্যার পর তিনি বাড়ির বাইরে যান। এরপর রাতে আর ফেরেননি। দুই ছেলে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও সন্ধান পাননি। চারদিকে বন্যার পানি থাকায় বেশি দূরে খুঁজতে পারেননি তারা।
রোববার সকাল থেকে দুই ছেলেসহ প্রতিবেশীরা আবারও ইরিনা বেগমকে খোঁজা শুরু করে। এক পর্যায়ে দুপুর ১২টার দিকে বন্যার পানির মধ্যে একটি গাছের ডালে ঝুলন্ত মরদেহের সন্ধান পাওয়া যায়। সমতল থেকে তিন ফুট পানি। সেখানে আরও দু-তিন ফুট উচ্চতায় মরদেহের পা গাছের সঙ্গে ঝুলে আছে।
এ দৃশ্য দেখে গ্রামে শুরু হয় বিভিন্ন আলোচনা। কেউ বলে তাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে আবার কেউ বলছেন এটা ‘জিন-ভূতের’ কাজ। এলাকার লোকজনের ভিন্ন ভিন্ন মতামতের কারণে ভয়ে পরিবারের কেউ এগিয়ে যাচ্ছিল না মরদেহ উদ্ধারে।
পরে সোনাতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম ফোর্স নিয়ে গাছ থেকে মরদেহ নিচে নামিয়ে আনেন। এরপর মরদেহ কেউ ধরতে চাচ্ছিলেন না। এমনকি ওই নারীর পরিবারের কেউ এগিয়ে আসেনি। একপর্যায়ে ওসি নিজেই এক পুলিশ সদস্যকে নিয়ে মরদেহ নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেন। এ সময় এগিয়ে আসেন স্থানীয় দুই ব্যক্তি। পরে মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়।
সোনাতলা থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, তিন ফুট বন্যার পানিতে থাকা একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় ওই নারীর মরদেহ। তার মৃত্যু নিয়ে নানা জনের নানা মত। এ কারণে ময়নাতদন্ত করতে মরদেহ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী পলাতক।
এসজে/এমএস