নৌ ভ্রমণের চাঁদার টাকা ফেরত চাওয়ায় পিটিয়ে হত্যা

নরসিংদীর মনোহরদীতে ঈদ পরবর্তী নৌ ভ্রমণের চাঁদার টাকা ফেরত চাওযায় আকরাম হোসেন শ্রাবণ (২২) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে বখাটেরা। এসময় শ্রাবণের মামা সাখাওয়াত হোসেনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।

সোমবার রাত ৯টায় উপজেলার একদুয়ারিয়া ইউনিয়নের একদুয়ারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আকরাম হোসেন শ্রাবণ উপজেলার একদুয়ারিয়া ইউনিয়নের কামার আলগী এলাকার মো শাহজাহানের ছেলে।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সকালে কাপাসিয়ার সনমানিয়া থেকে দুইজনকে আটক করে পুলিশ। পরে দুপুরে শ্রাবণের বাবা মো. শাহজাহান আটক দুইজনসহ অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনের নামে মনোহরদী থানায় মামলা করেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, উপজেলার একদুয়ারিয়া ইউনিযনের আসাদ মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া (১৮) ও রান্দনদিয়া এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে মৃদুল মিয়া (১৬)।

মামলা সূত্রে জানা যায়, রোববার (২৫ জুলাই) হৃদয়ের নেতৃত্বে একদুয়ারিয়া এলাকার ৭৩ তরুণ পাশ্ববর্তী শিবপুর উপজেলার লাখপুর শীতলক্ষ্যা নদীতে নৌকা ভ্রমণে যায়। এজন্য সবার কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে চাঁদা নেয়া হয়। সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য করে নৌকা ভ্রমণ করা য় নরসিংদী জেলার এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্টেট রিনাত ফৌজিয়া লাখপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে নৌকাটি আটক করে। এসময় বিধিনিষেধ ভঙের কারণে হৃদয়, মৃদুল, বায়োজিদ ও ইয়াছিনসহ ৩২ জনকে আর্থিক জরিমানা করা হয়। ফলে নৌকা ভ্রমণ পণ্ড হয়ে যায়। পরে বায়োজিদ ও ইয়াছিন নৌকা ভ্রমণ না করার কারণে হৃদয়কে তাদের চাঁদা ও জরিমানার টাকা ফেরত দিতে বলে। কিন্তু হৃদয় তাতে অপরাগত জানায়। পরে তারা টাকা উদ্ধারে শ্রাবণের কাছে বিচার দেয়। শ্রাবণ টাকার জন্য হৃদয়কে চাপ দেয়। হৃদয় জরিমানার টাকা নেয়ার জন্য শ্রাবণকে সোমবার রাতে একদুয়ারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে আসতে বলে। রাতে শ্রাবণ তার মামা সাখাওয়াতকে নিয়ে স্কুলের সামনে আসলে হৃদয় ও মুদুলসহ আরও ৪-৫ জন তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় বাঁশের লাঠি ও চালা দিয়ে শ্রাবণ ও সাখাওয়াতকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে রাস্তায় ফেলে রেখে তারা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাদের শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শ্রাবণকে মৃত ঘোষণা করেন। সাখাওয়াত মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

নিহতের বাবা শাহজাহান বলেন, আমার ছেলে নৌ ভ্রমণে যায়নি। সে অন্যের ভালো করতে চেয়েছিল। কিন্তু সামান্য কয়েকটা টাকার জন্য তারা ছেলেকে পিটিয়ে মেরে ফেললো। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।

মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান বলেন, সকালে কাপাসিয়ার সনমানিয়া এলাকায় হৃদয়ের গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে হৃদয় ও মৃদুলকে গ্রেফতার করা হয়। ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সঞ্জিত সাহা/এএইচ/এমএস