আমড়ার বাম্পার ফলনেও হাসি নেই রাজাপুরের চাষিদের মুখে
বরিশাল বিভাগের আমড়ার খ্যাতি দেশজুড়ে। এ বিভাগের মাটি ও পানি আমড়া চাষের জন্য বেশ উপযোগী। বিশেষ করে ঝালকাঠির রাজাপুরে সুস্বাদু আমড়ার ফলন হয় সবচেয়ে বেশি। বলা চলে সারা দেশের আমড়ার চাহিদার ৬০-৭০ ভাগ মেটায় এ অঞ্চলের চাষিরা। গেল কয়েক বছরে বাম্পার ফলনও হয়েছে। ভালো টাকা আয়ের সুযোগ থাকায় রাজাপুরের আমড়া চাষির সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে।
এরইমধ্যে রাজাপুরের আমড়া একটি অর্থকরী ফল হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলার স্থানীয় বাজারে পাইকারদের মাধ্যমে এসব আমড়া বিক্রি করে বাগানের মালিকরা কোটি কোটি টাকা আয় করছেন।
তবে এ বছর কিছুটা ভিন্ন। করোনা রোধে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধে যোগাযোগ সমস্যা আমড়ার চাহিদা কমে যায়। এছাড়া সামনের দিনগুলোতে করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কায় আমড়ার বাম্পার ফলন হলেও দাম পাচ্ছেন না চাষিরা। এতে লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা।
রাজাপুরের আমড়া চাষি মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহআলম নান্নু বলেন, ‘আমড়া চাষ সহজ ও লাভজনক বলে এর চাষ করছি। গত বছর প্রায় দেড় একর জমিতে লাগানো দেড় শতাধিক গাছ থেকে আমড়া বিক্রি করে প্রায় ৬০ হাজার টাকা পেয়েছিলাম। এ বছর ফলন গাছের সংখ্যা দুশতাধিক এবং ফলনও আগের তুলনায় বেশি। কিন্তু করোনায় পরিবহন সমস্যা ও লকডাউনের কারণে আমড়ার চাহিদা কমে যায়। এ কারণে পাইকার দামও বলছে কম। এবার লোকশানের মুখে পড়তে হবে মনে হয়।’
উপজেলার আংগারিয়া গ্রামের আমড়া চাষি মোদাচ্ছের হাওলাদার, দেলোয়ার হোসেন ও শাহআলম হাওলাদার বলেন, এবার আমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। পরিবহন সমস্যার কারণে দাম কম। এছাড়া মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণেও আমড়ার টাকা পুরোটা ঢোকে না চাষিদের পকেটে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা মো. রিয়াজুল্লাহ বাহাদুর বলেন, ‘এবছর রাজাপুরে ১৮০ হেক্টর জমিতে আমড়া চাষ করা হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ হাজার মেট্রিক টন। এটি একটি অর্থকরী ফসলও বটে। করোনা মহামারিতে পরিবহন সমস্যার কারণে চাষিরা এ বছর আমড়ার ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না।’
মো. আতিকুর রহমান/এসজে/জিকেএস