কলেজপড়ুয়া মাসুম এখন নির্মাণশ্রমিক
মাসুম লেখাপড়ার পাশাপাশি ভালো গানও গাইতো। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় সে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গেয়ে প্রতিভার স্বাক্ষর রাখে। বিভাগীয় পর্যায়ে পুরস্কৃত হয়েছিল। সেই মাসুম এখন আর আগের মতো গান করে না। দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সে এখন নির্মাণশ্রমিকের কাজ করছে। মা
মাসুম মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের নিজগাঁও গ্রামের ইসরাইল মিয়ার ছেলে। ভাইবোনের মধ্যে সে সবার বড়।
মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাব আর অভাবের কারণে মাসুমের শৈল্পিক প্রতিভা ও লেখাপড়া লন্ডভন্ড হয়ে যায়। বাদ্যযন্ত্র না থাকায় একসময় আর গান অনুশীলন করতে পারেনি। ২০১৮ সালে এসএসসি পাস করে সে ভর্তি হয়েছিল ফেঞ্চুগঞ্জ কলেজে। ভর্তির পরপর করোনার কারণে শিক্ষাতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। থেমে যায় শিক্ষাজীবন।
বাবা ইসরাইল মিয়াও একজন নির্মাণশ্রমিক। বাবার একার রোজগারে আর সংসার চলে না। তাইতো বাধ্য হয়ে পরিবারের দিকে তাকিয়ে বাবার পেশায় ঢুকেছে সেও।
মাসুমের মা মরিয়ম বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার ছেলে ভালো গান করতো। পড়ালেখার পাশপাশি গানেও পটু ছিল। করোনার কারণে কলেজ বন্ধ থাকায় সে পড়ালেখা থেকে দূরে রয়েছে। উপায় না দেখে এখন সে নির্মাণশ্রমিক হিসেবে মানুষের বাড়িতে কাজ করে।
পানিশাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল মাসুম। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘মাসুম একজন সম্ভাবনাময় গানের শিল্পী ছিল। অভাব আর করোনার অভিশাপে সে ঝরে পড়েছে। তাকে সহযোগিতা করলে সে গানের ভুবনে অবদান রাখতে পারত। একটা প্রতিভা অকালে ঝরে গেল!’
বিমলাচরণ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘ছেলেটা ভালো গান করত। পড়ালেখায়ও ভালো ছিল। এসএসসি পাস করার পর আর এগোতে পারেনি। তার প্রতিভা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে গেল।’
মাসুমের বিষয়ে কথা হয় উত্তরভাগ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য (মেম্বার) রকিব আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘শুনেছি ছেলেটা খুব ভালো ছিল। সীমাবদ্ধতার কারণে আমরা তাকে কোনো সহযোগিতা করতে পারিনি।’
অব্দুল আজিজ/এসআর/এমএস