খুলনার বাজারে চলছে চোর-পুলিশ খেলা
করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে সারাদেশের ন্যায় খুলনাতেও চলছে ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন। বিধিনিষেধ অমান্য করে খুলনার বাজারগুলোতে ঈদের কেনাকাটায় ছুটছেন মানুষ। স্বাস্থ্যবিধির চেয়ে কেনাকাটা করাটা তাদের কাছে যেন মুখ্য হয়ে উঠছে। বাজারে ক্রেতার সমাগম বৃদ্ধি পাওয়ায় দোকানপাটও খুলতে শুরু করেছে।
লকডাউনে দোকানপাট বন্ধ রাখার বিধিবিধান থাকলেও বাজারগুলোতে চলছে চোর-পুলিশ খেলা। অবস্থা এমন গোপনেই যেনো সবকিছু ওপেন রয়েছে খুলনার বড় বাজারে।
দোকানদার, ক্রেতাও শ্রমিকরা বলছেন, এতদিন সব বন্ধ থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম অসহায় অবস্থায় দিন চলছে। বাধ্য হয়েই চোর-পুলিশ খেলতে হচ্ছে আমাদের।
শনিবার খুলনার বড় বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় সব দোকানের সামনের সার্টার বন্ধ করে বসে আছেন দোকানীরা। কেউ সামনে দিয়ে গেলেই তার কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে কোনো কিছুর দরকার কি না? দরকার আছে বললেই সার্টার অর্ধেক খুলে ক্রেতাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ভেতরে। পুলিশ গেলেই বাইরে থেকে লাগিয়ে দেয়া হচ্ছে তালা। ভিতরে কি চলছে তা বাইরে থেকে বোঝার কোনো উপায় নেই। স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই ক্রেতারা দোকানে ঠাসাঠাসি করে পণ্য কিনে নিচ্ছেন।
বাজারের একাধিক বিক্রেতা অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, লকডাউন তো মানতেই হবে, কিন্তু পেট তো লকডাউন মানতে চাইছে না। এতো দিন সব বন্ধ রাখায় খুব সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
ক্রেতারা জানান, নতুন করে দেশব্যাপী দুই সপ্তাহের জন্য লকডাউন দেয়া হয়েছে। কিন্তু খুলনায় আরও বেশিদিন চলছে লকডাউন। বাসায় প্রায় সবকিছু শেষ। বাধ্য হয়ে বাজারে আসতে হয়েছে।
বড় বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, লকডাউনের প্রথম সপ্তাহে তারা একটুও বেচাকেনা করেননি। কিন্তু দোকান না খুললে অনেক মালামাল নষ্ট হয়ে যায়। এতে সব দিক থেকে লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের।
বড় বাজারের মুরাদ ট্রেডার্সের ম্যানেজার জিয়াউল হক মিলন বলেন, লকডাউনের ৭/৮ দিন পর থেকে বড় বাজারে ক্রেতা সমাগম বেড়ে গেছে বহু গুণে। সাধারণ ক্রেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থান থেকে খুচরা বিক্রেতারা জিনিসপত্র কিনতে আসায় বাজারে ভিড় বেড়েছে। অন্য সময়ের চেয়ে ক্রেতারা পণ্যও কিনেছেন চাহিদার তুলনায় বেশি। এত ক্রেতা সামলাতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
আসাদুল ইসলাম আরেক ব্যবসায়ী বলেন, লকডাউনে বড় বাজারের নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকানপাট খোলা থাকবে বলার পরও ক্রেতারা স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই বাজারে হুমড়ি খেয়ে পরছেন।
খুলনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাজারগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হলেও তেমন কোনো প্রভাব পড়ছে না।
আলমগীর হান্নান/আরএইচ/এমকেএইচ