ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ঝিনাইদহে দীর্ঘ হচ্ছে করোনায় মৃত্যুর মিছিল

জেলা প্রতিনিধি | ঝিনাইদহ | প্রকাশিত: ০৭:১০ পিএম, ০৯ জুলাই ২০২১

বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তিদের দাফন শেষে ক্লান্ত শরীর নিয়ে বাড়ি ফেরেন ঝিনাইদহ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের লাশ দাফন কমিটির সদস্য শাহিনুর রহমান। রাত ১১টার দিকে আবার সংবাদ আসে মৃত্যুর। রাত বেশি হাওয়ার কারণে যেতে না পেরে সকালের অপেক্ষায় ঘুমিয়ে পড়েন শাহিনুর। কিন্তু কে জানত ভোরের সূর্য ওঠার আগেই করোনায় ও উপসর্গ নিয়ে ঝরে যাবে আরও ১৫টি প্রাণ।

ভোরে এ খবর জানতে পেরে রীতিমতো স্তব্ধ হয়ে পড়েন শাহিনুর রহমান। এরপর ফজরের নামাজ শেষ করে সদস্যদের নিয়ে বেরিয়ে পড়েন লাশ দাফনের কাজে। এভাবেই প্রতিদিন মৃত্যুর খবর নিয়ে যেমন ঘুমোতে যেতে হয় তেমনি আবার মৃত্যুর খবরেই ভাঙে তার ঘুম। শুক্রবার (৯ জুলাই) দুপুরে কথা হলে এমনটিই জানান শাহিনুর রহমান।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ১০ জন ও উপসর্গ নিয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে করোনায় সদর হাসপাতালে ৯ জন এবং শৈলকূপায় একজন মারা যান। উপসর্গ নিয়ে সদরে তিনজন, মহেশপুরের বজরাপুরে একজন এবং কোটচাঁদপুরের জয়দিয়া এলাকায় একজন মারা গেছেন। একই সময়ে ৪৪২টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৬২ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তের হার ৩৬.৬৫ %। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল পাঁচ হাজার ৪৮২ জন। মৃত্যু হয়েছে ১২৮ জনের।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের লাশ দাফন কমিটির সদস্য শাহিনুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রতিদিন আমরা কারো না কারো লাশ দাফন করছি। এসব দেখার পরও সাধারণ মানুষ সচেতন হচ্ছে না। মানুষ জটলা বেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। লাশ দাফনে গেলে বোঝা যায় কি করুণ পরিস্থিতি এখন বিরাজ করছে।’

jagonews24

শেখ সুলতানা নামের এক রোগীর স্বজন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার মা তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। একটি সিলিন্ডার ইতোমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে, এখন আর একটা লাগালাম। শেষ রক্ষা হবে কি-না জানি না।’
জেলা শহরের বাসিন্দা সেজান মাহমুদ বলেন, ‘তিনদিন হলো শাশুড়িকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। আজ বাসায় নিয়ে যাচ্ছি। এই তিন দিনে যে পরিবেশ দেখলাম তা আসলেই হৃদয় বিদারক।’

সদ্য করোনা থেকে মুক্তি মেলায় বাবাকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন আসিফ আহমেদ কনক। তিনি বলেন, এতো কষ্টের মধ্যেও চোখে পানি এসে যাচ্ছে এই ভেবে যে, বাবাকে জীবিত অবস্থায় সুস্থ করে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারলাম।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন-অর-রশিদ জানান, করোনা পরিস্থিতি খুবই খারাপের দিকে যাচ্ছে। রোগীরা সুস্থ যেমন হচ্ছেন তেমনি মৃত্যুও হচ্ছে অনেকের। তবে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এসআর/এএসএম