সিলেটে বাড়ছে করোনা শনাক্তের হার, আইসিইউ’র জন্য হাহাকার
সিলেটে বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণের হার। ফলে প্রতিটি করোনা ডেডিকেটেড সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে এখন আর ঠাঁই নেই। সেখানে একটি আইসিইউ বেডের জন্য চলছে হাহাকার। রোগীদের নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন স্বজনরা।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে রেকর্ড ৩৮৯ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৪০ দশমিক ১৪ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক ডা. সুলতানা রাজিয়া স্বাক্ষরিত দৈনিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিভাগের চার জেলার মধ্যে সিলেট জেলায় করোনা শনাক্তের হার ৪৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ, যা এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ। একইসময় সিলেট জেলায় করোনায় আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়া বিভাগের হবিগঞ্জে করোনা শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ১২ শতাংশ, মৌলভীবাজারে ৩১ দশমিক ১৩ ও সুনামগঞ্জে ২০ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনা শনাক্ত ৩৮৯ জনের মধ্যে সিলেটে সর্বোচ্চ ২১৬ জন, মৌলভীবাজারে ৬৬, সুনামগঞ্জে ১৬ ও হবিগঞ্জে ৫১ জন। এছাড়া সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৪০ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৯ জন। এদের মধ্যে সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতালে ২৫ জন, মৌলভীবাজারে ১০ ও সুনামগঞ্জে চারজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সব মিলিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৫০৮ জন। এদের মধ্যে সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতালে ৪৫০ জন, সুনামগঞ্জে ২৬, হবিগঞ্জে সাতজন ও মৌলভীবাজারে ২৫ জন।
সিলেট বিভাগে এ পর্যন্ত করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ১০৫ জনে। এদের মধ্যে সিলেটে ১৮ হাজার ৫৩২ জন, সুনামগঞ্জে ৩ হাজার ১৭৩ জন, হবিগঞ্জে ৩ হাজার দুজন ও মৌলভীবাজারে ৩ হাজার ৩৯৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। বর্তমানে এ বিভাগে সক্রিয় রোগী রয়েছেন ৩ হাজার ১২২ জন।
সিলেট বিভাগের চার জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় মোট ৫০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে সিলেট জেলায় ৪১০ জন, সুনামগঞ্জে ৩৫ জন, হবিগঞ্জে ২২ জন ও মৌলভীবাজারে ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ সিলেটের সহকারী পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. নুরে আলম শামীম জানান, গত ১০ দিন ধরে সিলেটের করোনা ডেডিকেটেড ১০০ শয্যার শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল ও আইসোলেশন সেন্টারে রোগীদের চাপ বেড়েছে। গুরুতর রোগীদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেয়ার প্রয়োজন হয়। এজন্য এখানে আইসিইউ খালি থাকছে না। একটি শয্যা খালি হলে সঙ্গে সঙ্গে নতুন রোগী এখানে চলে আসছেন।
তিনি আর বলেন, করোনা রোগীর সংখ্যা কমিয়ে আনা না গেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। উপজেলা ও জেলা সদর হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তির জন্য নির্দেশ দিয়েছি ও সাধারণ করোনা রোগীদের অক্সিজেন দেয়ার সব ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া রোগী প্রাথমিকভাবে শনাক্ত ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসা শুরু করলে সঙ্কটাপন্ন রোগীর সংখ্যা কমে আসবে।
ছামির মাহমুদ/এসএমএম/জেআইএম