হোমনায় ‘জিটুপি’ পদ্ধতিতে শতাধিক উপকারভোগীর ভাতা না পাওয়ার অভিযোগ
কুমিল্লার হোমনা উপজেলায় শতাধিক বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী নারী-পুরুষ সরকারি ভাতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে উপকারভোগীদের কাছে ভাতা পৌঁছে দেয়ার জন্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ‘জিটুপি’ (গভর্নমেন্ট টু পার্সন) পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। তাতেও বন্ধ হয়নি হয়রানি। বরং আগের তুলনায় ভোগান্তি আরও বেড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মোবাইল ব্যাংকিং নম্বরসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেয়ার পরেও উপকারভোগীরা পাননি সরকারের দেয়া ভাতা। এ নিয়ে দায়সারা বক্তব্য নিয়েছেন উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা।
উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্র জানায়, হোমনায় ৭ হাজার ৩৪৭ জন বয়স্ক, ২ হাজার ৬০৯ জন বিধবা ও ২ হাজার ৭৯২ জন প্রতিবন্ধীসহ মোট ১২ হাজার ৭৪৮ জন ভাতাভোগী রয়েছেন। চলতি বছর তাদের মোবাইল ব্যাংকিং নম্বরে বয়স্ক ও বিধবাদের জন্য জনপ্রতি ৩ হাজার এবং অসচ্ছল প্রতিবন্ধীদের জন্য জনপ্রতি ৪ হাজার ৫০০ টাকা জমা হওয়ার কথা।
তালিকায় নাম থাকার পরেও ভাতা না পৌর এলাকার মো. নূরু মিয়া বলেন, ‘সরকার আগে বইয়ের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে ভাতার টাকা দিত। কিন্তু ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে ব্যক্তিগত বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা দেয়া শুরু করে। এরপর আমরা নিজ নিজ বিকাশ নম্বর অফিসে জমা দেই। গত জুন মাসে ভাতার তিন হাজার টাকা অন্য ভাতাভোগীদের বিকাশ নম্বরে টাকা গেলেও আমার বিকাশ নম্বরে আসেনি।’
সমাজসেবা কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে মিরশ্বীকারী গ্রামের আয়েশা বেগম বলেন, ‘আমি স্যারের কাছে বিকাশ নম্বর জমা দিয়েছিলাম। আমার এ নম্বরে কোনো টাকা আসে নাই। পরে অফিসে যোগাযোগ করলে অফিসের লোকজন জানায় আমার ভাতা নাকি অন্য নম্বরে চলে গেছে। এ বছর আর পাব না।’
এ ছাড়াও নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, ‘অফিস বা কোনো ব্যক্তির কারসাজিতে তারা টাকা পাননি। বিষয়টি তদন্ত করে পুনরায় ভাতা বিতরণের অনুরোধ জানান তারা।’
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রমজান আলী বলেন, ‘কিছু ভাতাভোগীর বিকাশ নম্বর ভুল হওয়ায় টাকা অন্য নম্বরে চলে যেতে পারে। আমরা সংশোধন করে দিচ্ছি। পরবর্তীতে আর এ ভুল হবে না।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুমন দে বলেন, ‘ভাতাভোগী অনেকের মোবাইলে ভাতার টাকা না যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। সমাজসেবা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
কুমিল্লা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক এ.এস.এম জোবায়েদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভুল নম্বরে টাকা যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ভাতা না পাওয়া ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
জাহিদ পাটোয়ারী/এসএস/জেআইএম