যশোর হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর চাপ, মেঝেতেও চিকিৎসা
করোনায় আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রোগী ভর্তির চাপ অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীর চাপ বেশি। ফলে মেঝেতেও চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। মেঝে পরিপূর্ণ হয়ে গেলে বারান্দা বা বাইরেও রোগীদের অবস্থান করতে হচ্ছে। আর এই বাড়তি রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) দুপুরে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ড. আরিফ আহমেদ জানান, হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে ২৩৫ জন রোগী ভর্তি আছেন।
যশোর সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য কর্মকর্তা ডা. মো. রেহেনেওয়াজ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যশোর হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে ১১ জন মারা গেছেন। একই সময়ে ৮৬৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩৫২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালে করোনা রোগীদের রেডজোনে ভর্তি রয়েছেন ১৬১ জন। এতে শয্যা সংখ্যা ১৪৬টি। উপসর্গ নিয়ে ভর্তির জন্য ইয়েলোজোনের তিনটি ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা ৩১টি। কিন্তু রোগী ভর্তি রয়েছেন ৭৪ জন। রেড ও ইয়েলোজোনে রোগীদের প্রচণ্ড চাপ রয়েছে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘যশোর জেনারেল হাসপাতালে ডাক্তার ও নার্সসহ সব স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে দিন-রাত কাজ করে চলেছেন। তবে ক্রমবর্ধমান রোগীর চাপ সামাল দেয়ার জন্য হাসপাতালের রেড ও ইয়েলোজোনের বেডের সংখ্যা প্রাথমিক অবস্থার দ্বিগুণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে ১১ বেডের আইসিইউ ও ১৫ বেডের এইচডিইউ’র ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই কর্মযজ্ঞে নিজস্ব জনবল ও আনুষঙ্গিক সুবিধাসহ সামিল হয়েছে সাজেদা ফাউন্ডেশন নামে একটি বেসরকারি সংস্থা।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে এই হাসপাতালে ২১টি নেজাল ক্যানুলা ডিভাইস, দুটি এনআইভি বাইপ্যাপ, সিপ্যাপ মেশিন, আইসিইউ পরিচালনার স্পেয়ার পার্টস ৩৫টি অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর, ৩৬৫টি ছোট সিলিন্ডার, ৯৪টি বড় সিলিন্ডার, সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন অক্সিজেন ট্যাংক রয়েছে। রোটেটিং রোস্টারে আছেন ৩৩ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, ১৭ জন মেডিকেল অফিসারও ৪০ জন সেবিকা।’
তত্ত্বাবধায়ক উল্লেখ করেন, ‘ইয়েলোজোনে বিভিন্ন উপজেলাসহ আশপাশের জেলা থেকে আসা রোগীদের একটা চাপ সৃষ্টি হয়। যার কারণে রোগীর সেবা দিতে সাময়িক বিলম্ব হতে পারে। ইয়েলোজোনের এই চাপ সামাল দেয়ার জন্য ২৪ শয্যার নারী আইসোলেশন খোলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বিদ্যমান জনবল ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদি দিয়ে আমরা যথেষ্ট দক্ষতা ও সফলতার সঙ্গে করোনার এই অতিমারিকে মোকাবিলা করে চলছি। এ নিরবচ্ছিন্ন উদ্যোগ চলমান থাকবে।’
মিলন রহমান/এসজে/এএসএম