কুড়িগ্রামে আগুনে ছয় দোকান পুড়ে ৭ লাখ টাকার ক্ষতি
কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার পুরাতন রেলস্টেশন সংলগ্ন বাজারে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে ছয়টি দোকান পুড়ে গেছে। এতে প্রায় সাত লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সকালে জেলা শহরের পৌর এলাকার পুরাতন স্টেশন সংলগ্ন বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে পথচারীরা মাসুদের মুদি দোকানে আগুন দেখতে পান। পরে এলাকাবাসী আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তবে আগুন মুহূর্তেই চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় খবর দেয়া হলে, ফায়ার সার্ভিস দীর্ঘসময় চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এরমধ্যেই তিনটি মুদি দোকান, একটি ফার্মেসি, একটি ইলেকট্রনিক পণ্যের দোকানসহ একটি পানের দোকান পুড়ে যায়।
ক্ষতিগ্রস্ত মুদি দোকানদার মাসুদ বলেন, আগুনে দোকানে থাকা দুটি ফ্রিজ, একটি টিভি, আসবাবপত্র, মোবাইলসহ ফ্লেক্সিলোড ও বিকাশ ব্যবসায় ব্যবহৃত ছয়টি মোবাইল, মোবাইলের মিনিট কার্ড, বাকির খাতা, ব্যাংক ও এনজিও থেকে নেয়া ঋণের বই, চাল, ডালসহ মুদি ব্যবসার যাবতীয় মালামাল ও কসমেটিকস সামগ্রী পুড়ে যায়। এতে আনুমানিক সাত লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইসলামী ব্যাংক ও আরডিআরএসসহ একাধিক এনজিও থেকে নেয়া আনুমানিক ৪ লাখ টাকা ব্যবসায় লাগিয়েছিলাম। এছাড়াও মহাজনরা আমার কাছ থেকে প্রায় ৬০ হাজার টাকা পাবেন। আমার সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। নিঃস্ব হয়ে পথে বসে গেলাম। এখন কীভাবে ঋণ পরিশোধ করবো? কীভাবে সংসারে ব্যয় বহন করবো?
ক্ষতিগ্রস্ত ফার্মেস্যারর মালিক আ. মান্নান বলেন, আগুনে দোকানের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ওষুধ পুড়ে গেছে। এছাড়া একটি কম্পিউটার সেট, চারটি সিসিটিভি ক্যামেরা, দুটি সিলিং ফ্যান ও আসবাবপত্রের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে দুই লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে।
কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা আলী সাজ্জাদ জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সকাল ৬টা ২০ মিনিটে কাজ শুরু করেন। দীর্ঘ এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে তারা। এতে ছয়টি দোকান পুড়ে যায়। তবে এ সময় দোকানগুলো থেকে প্রায় আট লাখ টাকার মালামাল উদ্ধার করা হয়। এছাড়া বাজারে থাকা ৭০টি দোকান রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এ আগুনের সূত্রপাত।
কুড়িগ্রাম পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আপেল বলেন, আগুনে ছয়টি দোকান পুড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে আনুমানিক সাত লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মুদি দোকানদার মাসুদ ও ফার্মেসির মালিক আ. মান্নানের। এছাড়া ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করা মুদি দোকানি মাসুদের সর্বস্ব পুড়ে যাওয়ায় তিনি পথে বসে গেছেন। আমি অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি মেয়র সাহেবকে জানিয়েছি।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিলুফা ইয়াছমিন বলেন, পৌর মেয়র আগুনের বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। সরেজমিনে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হবে।
মাসুদ রানা/এসএমএম/এমকেএইচ