ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে বরিশালে লাখ টাকা জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক | বরিশাল | প্রকাশিত: ০৫:২৯ এএম, ০৩ জুলাই ২০২১

কঠোর লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে বিধিনিষেধ না মানায় বরিশালে ১১৩ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ ১৯ হাজার ৫৫০ টাকা জরিমানা করেছেন জেলা প্রশাসন পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত।

শুক্রবার (২ জুলাই) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জেলাজুড়ে বিধিনিষেধ কার্যকর করতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে ২০টি দল দায়িত্বপালন করেন। তাদের সহায়তা করেন বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যরা। এ সময় বিনা প্রয়োজনে ঘোরাফেরা, দোকান খোলা রাখা ও মাস্ক না পরার দায়ে ১১৩ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়।

এদিকে বরিশালে মেট্রোপলিটন ও জেলা পুলিশের উদ্যোগে মসজিদে মসজিদে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে।

জুম্মার নামাজের আগে ও পরে জেলার বিভিন্ন মসজিদে পুলিশের পক্ষ থেকে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। কার্যক্রমের মধ্যে ছিল মসজিদের সামনে মাইকিং, লিফলেট বিতরণ, খুতবার বয়ানের আগে করোনা সংক্রমণ রোধে করণীয় সম্পর্কে আলোচনা ও বিনামূল্যে মাস্ক-হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ।

নগরীর চকবাজার ঐতিহ্যবাহী জামে এবাদুল্লাহ মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান। খুতবার আগে তিনি মুসুল্লিদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন।

তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে দেশ ও জাতিকে সুরক্ষিত রাখতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই। এই মুহূর্তে মাস্কই হলো আমাদের কাছে প্রথম ও প্রধান ভ্যাকসিন। তাই আমাদের মাস্ক ব্যবহার অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। পাশাপাশি কোনো কিছু স্পর্শ করার আগে ও পরে হ্যান্ড স্যানিটাইজ করা ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। তাহলে করোনার ছোবল থেকে আমরা দেশ ও জাতিকে অনেকাংশেই সুরক্ষিত রাখতে পারব।

jagonews24

এ সময় তিনি সরকারঘোষিত লকডাউন বাস্তবায়নে অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া জনগণকে ঘরের বাইরে বের না হওয়ার আহ্বান জানান।

এছাড়াও বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্যোগে নগরীর ৩৭০টি মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি পালন ও লকডাউন বাস্তবায়নে নগরবাসীকে উদ্বুদ্ধ করতে সচেতনতামূলক নানা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। একইভাবে জেলা পুলিশের উদ্যোগে মসজিদে মসজিদে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আফজাল হোসেন জানান, রেঞ্জ ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামান এবং জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন স্যারের নির্দেশে জুম্মার নামাজের আগে ও পরে বিভিন্ন মসজিদে গৌরনদী উপজেলার পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং, লিফলেট ও বিনামূল্যে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে জনসাধারণকে আহ্বান জানানো হয়।

jagonews24

পুলিশের সচেতনতামূলক এসব কার্যক্রমের পাশাপাশি বিধিনিষেধ কার্যকর করতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলাজুড়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পৃথকভাবে ২০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ মো. হেলাল উদ্দিন জানান, রাস্তাঘাটে সকালে খুব কম সংখ্যক মানুষ দেখা গেছে। এর মধ্যে কেউ চিকিৎসা সেবা নিতে, কেউ নিত্যপণ্য কিনতে আবার কেউ ওষুধ কিনতে বের হয়েছেন। তবে কেউ কেউ প্রয়োজন ছাড়াই বের হয়েছেন। তাদেরকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। কিছু ব্যক্তি ঠুনকো প্রয়োজনের কথা বলেছেন- এমন ব্যক্তিদের জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার জানান, করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারঘোষিত বিধিনিষেধ যথাযথভাবে বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে জেলা প্রশাসন। বিধিনিষেধ কার্যকর করতে জেলাজুড়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পৃথকভাবে ২০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। নগরীতে সাতজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালিয়ে ৩৬ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন অপরাধে ১৯ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা করেন। পাশাপাশি জেলার ১০ উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনাররা (ভূমি) ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৭৭ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পৃথক মামলায় ৯৯ হাজার ৮৫০ টাকা জরিমানা করেন।

সাইফ আমীন/এআরএ