মেহেরপুর সীমান্তের গ্রামে বাড়ছে সংক্রমণ, কেউ মানছে না বিধিনিষেধ
দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছেই। একই পরিস্থিতি মেহেরপুর জেলারও। সংক্রমণ বাড়ায় গত ১৫ জুন থেকে মেহেরপুরের সীমান্তবর্তী গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার তিনটি গ্রামে ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন দিয়েছে প্রশাসন। গ্রাম তিনটি হলো- মুজিবনগরে আনন্দবাস এবং গাংনীর তেঁতুলবাড়িয়া ও হিন্দা।
তবে সংক্রমণ ঝুঁকিতে থাকা মেহেরপুরে শহরকেন্দ্রীক প্রশাসন ও পুলিশের তৎপরতা দেখা গেলেও গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই নেই। সেখানে প্রশাসনের নজরদারিও নেই। ফলে সীমান্তবর্তী এ জেলায় সংক্রমণ পরিস্থিতি যেকোনো সময় ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রশাসনের ঘোষণা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রাখা যাবে। জেলা ও উপজেলা শহরে প্রশাসনের তৎপরতায় সন্ধ্যায় দোকানপাট বন্ধ হলেও গ্রামে দোকান খোলা থাকছে গভীর রাত পর্যন্ত। এসব দোকানে আড্ডা দিচ্ছে গ্রামের মানুষ। সেখানে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই।
সরেজমিনে রাত ৮টার দিকে দেখা গেছে, বামন্দী বাজারের দোকানপাট খোলা। চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছেন মানুষ। তাদের অধিকাংশের মুখে মাস্ক নেই। বসেছেনও সামাজিক দূরত্ব না মেনেই। একই অবস্থা রাইপুর, মড়কা হেমায়েতপুর, জোড়পুকুর, বাওট সহড়াবাড়িয়া হোগলবাড়িয়া কাজিপুর নওপাড়াসহ অন্যান্য বাজারে।
বামন্দী বাজার কমিটির সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান আওয়াল হোসেন জানান, দোকানপাট খোলা থাকছে। পুলিশ প্রশাসন যদি দোকান বন্ধে বাজার কমিটির সহযোগিতা চায়, তবে তা দেয়া হবে। কিন্তু পুলিশি তৎপরতা না থাকায় বাজার কমিটি কিছু করতে পারছে না।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রহমান বলেন, ‘সব জায়গায় একইভাবে দোকান বন্ধে অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না। বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে তারপরও পুলিশ চেষ্টা করছে। তবে সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে।’
গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌসুমী খানম বলেন, ‘প্রশাসন তৎপর রয়েছে। করোনার বিস্তার রোধে যা যা করণীয়, তাই করা হবে। কোনোস্থানে বিধি ভঙ্গের ব্যাপারে তথ্য পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেইসঙ্গে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।’
জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতি জেলায় সংক্রমণ ফের বেড়েছে। নমুনা পরীক্ষার হিসাবে প্রতিদিন প্রায় ২৭ শতাংশ রিপোর্ট পজিটিভ আসছে। বুধবারও (১৬ জুন) জেলায় নতুন করে ২০ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত জেলায় মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৩১৫ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৩০ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ৯৪৭ জন।
আসিফ ইকবাল/এএএইচ/জিকেএস