প্রতারণা মামলায় ফরিদপুরের সাবেক এমপির ভাতিজা কারাগারে
ফরিদপুরের প্রতারণার মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সিরাজুল ইসলামের ভাতিজা আব্দুল্লাহ আল রশীদকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ মে) ৭ নম্বর আমলী আদালতের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসামির জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আসামি রশীদ ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলির সদস্য কাজী সিরাজুল ইসলামের আপন ভাতিজা।
জানা যায়, ২০২০ সালের ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌর সদরের দক্ষিণ কামারগ্রামের আবুল বাসার মিয়ার ছেলে মেহেদি হাসান বাদী হয়ে পাশের আলফাডাঙ্গার বানা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদের ছেলে কাজী আব্দুল্লাহ আল রশীদকে আসামি করে মামলা করেন।
মোকদ্দমা দ. বি. আইনের ৪০৬/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৫০৬ (বি) ধারায় ফরিদপুর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ৭ নম্বর আমলী আদালতে মামলাটি করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসেবে মেহেদি হাসান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কাজী আব্দুল্লাহ আল রশীদ কার্যক্রম শুরু করেন। এরপর ২০২০ সালে অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগে মেহেদি হাসান কোম্পানির অংশীদারিত্ব ছেড়ে দেন। তখন কাজী আব্দুল্লাহর কাছে ব্যবসার অংশীদারিত্বের সাত লাখ টাকা পাওনা থাকে মেহেদীর।
২০২০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মেহেদি ওই টাকা আদায়ের জন্য বোয়ালমারী ওয়াপদা মোড়ের কাজী হারুন শপিং কমপ্লেক্স অফিসে যান। সেখানে একপর্যায়ে মেহেদির পকেটে থাকা মানিব্যাগটি ভুলক্রমে পড়ে যায়। মানিব্যাগে টাকার অঙ্ক না লেখা স্বাক্ষরিত-অস্বাক্ষরিত একাধিক চেকের পাতা ছিল।
অভিযোগে মেহেদি হাসান উল্লেখ করেন, খোয়া যাওয়া ওই চেকের পাতাগুলোর একটিতে ২৫ লাখ টাকা ইচ্ছামতো লিখে তাকে ব্যাংকে ডিজঅনার করান কাজী আব্দুল্লাহ আল রশীদ।
২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর আদালত বিষয়টি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ফরিদপুরকে দায়িত্ব দেন। অনুসন্ধান শেষে ২০২১ সালের ২ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় পিবিআই।
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মামলার আসামি কাজী আব্দুল্লাহ আল রশীদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
এরপর এ মামলায় ২০২১ সালের ২ মার্চ আসামি রশীদ হাইকোর্টে বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সরোয়ারের বেঞ্চে আগাম জামিন চান। হাইকোর্ট ডিভিশন তার ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন মঞ্জুর করে ও নিম্ন আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।
কিন্তু আসামি রশীদ হাইকোর্টের বেধে দেয়া সময়ে আদালতে হাজির হননি। পরে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির হলে তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়।
শুক্রবার (২৮ মে) বিকেল সাড়ে ৫টায় কাজী আব্দুল্লাহ আল রশীদের বাবা কাজী হারুন অর রশীদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এসএমএম/এমএস