ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত, স্বামী আটক

প্রকাশিত: ০৫:৫৩ পিএম, ০১ ডিসেম্বর ২০১৫

সিলেট শহরতলির ইসলামপুর এলাকায় যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করে আহত করেছে এক পাষাণ্ড স্বামী। মঙ্গলবার বিকেলে পরিবারের লোকজন অজ্ঞান অবস্থায় নির্যাতিত সুমিকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। এঘটনায় নির্যাতনকারী স্বামী শামীম খানকে আটক করেছে শাহপরাণ থানা পুলিশ।

নির্যাতিত সুমির পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১১ বছর আগে শহররতলির মেজরটিলা ৭৫-এ ইসলামপুর এলাকার শামীম খানের সঙ্গে বিয়ে হয় জকিগঞ্জ উপজেলার ৯নং মানিকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের সৈয়দ মঈন উদ্দিনের মেয়ে সুমির। বিয়ের কিছুদিন ভালো গেলেও হঠাৎ করেই বদলে যান শামীম। যৌতুকের জন্য নির্যাতন শুরু করেন সুমির ওপর। নির্যাতন ঢাকতে সুমিকে প্যাথেডিন ইনজেকশন দিতেন শামীম। তাতেই ক্ষ্যান্ত না হয়ে সর্বশেষ মঙ্গলবার বিকেলে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করে নিষ্ঠুর বর্বরতা চালান তিনি।

সুমির পরিবারের লোকজন জানান, বিয়ের পর কিছুদিন ভালো কাটলেও এর পর থেকেই সুমির ওপর শুরু হয় নির্যাতন। বিয়ের এক বছর পূর্ণ হতে না হতেই কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে সন্তান। তার নাম রাখা হয় তাহনু আক্তার। এভাবে কাটতে থাকে সুমির জীবন। তাহনুর জন্মের তিন বছর পর আরও একটি সন্তান আসে সুমির ঘরে। তার নাম তাকিব। দুটি সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়েই ১১ বছর ধরে মুখবুঝে সংসার করছেন সুমি।

একপর্যায়ে স্বামীর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। সর্বশেষ স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করে নিষ্ঠুর নির্যাতন চালায়। শিশু কন্যা তাহনু ও ছেলে তাকিব মাকে নির্যাতন না করার জন্য বারবার বাবার কাছে আবদার করে। কিন্তু ক্ষুদ্ধ শামীম সন্তানদের সামনেই সুমিকে ছুরিকাঘাত করে বলে স্থানীয় লোকজন জানান।

সুমির উপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেলে শামীমের বৃদ্ধ মা মঙ্গলবার ফোন দিয়ে সুমিকে যেকোনো উপায়ে উদ্ধার করার জন্য জানান। সুমির শাশুড়ির ফোন পেয়ে পরিবারের লোকজন পুলিশ নিয়ে গিয়ে উদ্ধার করে তাকে। এ সময় সুমি সংজ্ঞাহীন ছিলেন। তার শরীর থেকে রক্ত ঝরছিল। তার গায়ে ছিল একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন।

ঘরে পাওয়া যায় প্যাথেডিন ইনজেকশনের খালি বোতল। সঙ্গে সঙ্গে তাকে পাঠানো হয় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। বর্তমানে সুমি হাসপাতালের ৪র্থ তলার ৬নং ওয়ার্ডে চিকিসাধীন।

জানা যায়, মাসখানেক আগে সুমিকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন শামীম। পরে সুমির মা ও অন্যান্যদের কাছে শামীম মাফ চাইলে সবাই তাকে ক্ষমা করে সুমিকে তার হাতে তুলে দেন। এরপর থেকেই তার ওপর নতুন মাত্রায় শুরু হয় নির্যাতন। প্রায়ই সুমির উপর প্যাথেডিন ইনজেকশন পুশ করা হতো বলে পরিবারের লোকজন জানান।

স্বামীর নির্যাতন মাথায় নিয়েই অনেক কষ্টে আগলে রাখেন সংসার। দুটি সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে নির্যাতনের কথা মুখ খুলে বলেননি পরিবারের কাউকে। সুমির মা আলেয়া বেগম জাগো নিউজকে বলেন, বড় কষ্ট করে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। সাধ্যমতো সব দিয়েছি। তাকে এমন নির্যাতন চালানো হয়েছে, আমি তার শাস্তি চাই। শামীমের এমন কঠিন শাস্তি যেন হয়, যা দেখে স্ত্রী নির্যাতনের মতো জঘণ্য অপরাধ করতে অন্যরাও ভয় পায়।

এ ব্যাপারে শাহপরাণ থানার ওসি নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, স্ত্রীকে নির্যাতনের ঘটনায় শামীমকে আটক করা হয়েছে। পরিবারের লোকজন মামলা দিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ছামির মাহমুদ/বিএ