‘করোনার ভয় আছে, তারপরও বাড়ি যেতে হবে’
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন আকবর হোসেন। স্ত্রী আর দুই সন্তানকে নিয়ে ঢাকাতে থাকেন। গ্রামের বাড়ি যশোর জেলায়। দুই ঈদ আর বড় ছুটি ছাড়া বাড়ি যাওয়া হয় না। বাড়িতে বৃদ্ধ মা-বাবা আর ভাই-ভাতিজারা আছেন। সবার জন্যই কিনেছেন নতুন জামা কাপড়। বাড়ির সবাই তাদের পথ চেয়ে বসে আছেন। তাইতো সরকারি বিধিনিষেধ বা সড়কের চেকপোস্ট কোনো কিছুতেই আটকানো যায়নি তাকে। রাতে সাহরি খেয়েই বাড়ির পথে রওনা হয়েছেন তিনি।
গাবতলী থেকে আরও অনেকের সঙ্গে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে উঠেছেন ছোট ট্রাকে। সড়কের চেকপোস্ট এড়াতে গ্রামীণ পথ ধরে সাত ঘণ্টা পর পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছে তাদের বহনকারী ট্রাকটি। তারপরও বাড়ি যেতে পারছেন, এই ভেবে খুশি আকবর।
আকবরের মতো হাজারো মানুষ করোনা সংক্রমণ ভয়কে তুচ্ছ করে পাটুরিয়া ফেরি ঘাট দিয়ে ছুটছেন বাড়ির পথে। এই বাড়ি যাওয়ার সঙ্গে তাদের যেন আবেগ জড়িত।
ফরিদপুরগামী আনিছুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘করোনার ভয় আছে। তারপরও উপায় নেই, বাড়ি যেতে হবে। মা-বাবা বসে আছেন। তাদের একমাত্র সন্তান আমি। তাদের ছাড়া কীভাবে ঈদ করব? তবে সরকার দূরপাল্লার বাস চালু করলে এই দুর্ভোগ আর ভোগান্তিতে পড়তে হতো না।’
বুধবার (১২ মে) সকাল থেকে প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে রাজধানী ছেড়ে আসা মানুষের চাপ রয়েছে। তবে বিনাবাধায় পারাপার হতে পারছেন ফেরিতে। চাপ রয়েছে ব্যক্তিগত গাড়িরও।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, পাটুরিয়া ঘাট থেকে যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে ছেড়ে যাচ্ছে একের পর এক ফেরি। একইভাবে দৌলতদিয়া ঘাট থেকেও ফেরি আসছে। ঘাটে পৌঁছে বড় ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই ফেরি পার হতে পেরে স্বস্তি জানিয়েছেন যাত্রীরা।
শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ কবীর জানান, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে মোট ১৬টি ফেরি রয়েছে। যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফেরি চলাচল করছে। এ কারণে ঘাটে জরুরি যানের সঙ্গে যাত্রীরা সহজেই পারাপার হতে পারছেন।
তবে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
বি.এম খোরশেদ/এসআর/এমকেএইচ