ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

করোনার কারণে এবারও ঈদ জামাত হবে না শোলাকিয়ায়

জেলা প্রতিনিধি | কিশোরগঞ্জ | প্রকাশিত: ০৭:১৬ পিএম, ১০ মে ২০২১

করোনা মহামারির ছোবলে এবারও মুসল্লিশূন্য থাকছে উপ-মহাদেশের বৃহত্তম আর দেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া। প্রায় পৌনে ৩০০ বছরের ইতিহাসে দ্বিতীয় বারের মতো ঈদের দিনও নির্জন থাকবে দেশের সবচেয়ে বড় এই ঈদগাহ ময়দান। গত বছরের আগে এমন নির্জনতা কেউ দেখেনি।

করোনা মহামারির কারণে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গত বছরের মতো এবারও ঈদগাহ কিংবা খোলা মাঠে ঈদের জামাত পড়া যাবে না। তাই সরকারি নির্দেশ পেয়ে ঈদগাহ পরিচালনা কমিটি সভা করে শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত না করার সিদ্ধান্ত নেয়। রোববার বিকেলে (৯ মে) ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সোমবার (১০ মে) ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

Kishoregonj

১৯২ বছর আগে শোলাকিয়ায় ঈদের বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এরও দুশ বছর আগে থেকে এখানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতি বছর শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠানে নেয়া হয় ব্যাপক প্রস্তুতি। বিশেষ করে ঈদুল ফিতরে দেশ-বিদেশের তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ মুসল্লি একসঙ্গে শোলাকিয়ার বিশাল প্রান্তরে নামাজ পড়েন। এখানে একটি মাত্র জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

বিশাল প্রান্তরে সব মুসল্লি যাতে নামাজ শুরুর মুহূর্তটি জানতে পারেন, সেজন্য নামাজ শুরুর আগে বেশ কয়েকবার বন্দুকের গুলি ছোড়া হয়। সবশেষে জামাত শুরুর এক মিনিট আগে গুলি ছুড়ে চূড়ান্ত প্রস্তুতি ঘোষণা করা হয়।

লাখো মুসল্লির নিরাপত্তায় নেয়া হয় চার স্তরের নিরাপত্তা। সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশসহ বিপুলসংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন থাকে মাঠের চারপাশে। জামাত ঘিরে পুরো শহর যানবাহনশূন্য করে সাজানো হয় ট্রাফিক ব্যবস্থা। আকাশে নজরদারি করে উন্নত ক্যামেরাযুক্ত ড্রোন। দূরের মুসল্লিদের জন্য ময়মনসিংহ ও ভৈরববাজার থেকে চলাচল করে দুটি বিশেষ ট্রেন সার্ভিস। তবে এবারও সব আয়োজন থামিয়ে দেয় অদৃশ্য করোনা।

Kishoregonj

জানা গেছে, বারো ভূঁইয়াদের অন্যতম প্রতাপশালী বীর ঈশা খাঁর ১৬তম বংশধর দেওয়ান মান্নান দাদ খাঁ ১৯৫০ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহটি ওয়াকফ করেন। তারও দুশ বছর আগে থেকে শোলাকিয়া মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বলে উল্লেখ আছে ওই ওয়াকফ দলিলে।

১৮২৮ সালে ঈদুল ফিতরের বড় জামাতে এ মাঠে প্রথম ১ লাখ ২৫ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়ালাখিয়া’, যা এখন শোলাকিয়া নামে পরিচিত।

২০১৬ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহের কাছে পুলিশের একটি নিরাপত্তা চৌকিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা হয়। ওই হামলায় দুই পুলিশ সদস্যসহ নিহত হন বেশ কয়েকজন। তবু থেমে থাকেনি ঈদের জামাত। তবে এই প্রথমবারের মতো ঈদের দিনও নীরব থাকছে ঐতিহাসিক শোলাকিয়া।

নূর মোহাম্মদ/এসজে/এমএস