বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে চলছে স্পিডবোট, নিচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়াও
রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগের অন্যতম নৌপথ বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুট। চলমান লকডাউনে গণপরিবহনের সঙ্গে সঙ্গে এই নৌরুটের লঞ্চ ও স্পিডবোট বন্ধ রয়েছে গত ৫ এপ্রিল থেকে।
কিন্তু সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ২৭ এপ্রিল থেকে ওই নৌরুটে চলাচল শুরু করেছে স্পিডবোট। দ্বিগুণ ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের পারাপার করা হচ্ছে। ফেরিতে উঠতে ব্যর্থ এবং দ্রুত যাওয়ার তাড়া থেকে অসংখ্য যাত্রীরা স্পিডবোটে বাড়তি ভাড়া দিয়েই পার হচ্ছেন।
বুধবার (২৮ এপ্রিল) সরেজমিনে বাংলাবাজার ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়তে থাকে ঢাকাগামী যাত্রীদের। ফেরিতে রয়েছে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। পদ্মা পার হতে যাত্রীদের মধ্যে এক ধরনের ‘তাড়া’ রয়েছে।
ফেরিতে উঠতে ব্যর্থ হয়ে অনেক যাত্রীই পার হচ্ছেন স্পিডবোটে। ফেরি ঘাট ছেড়ে যাওয়ার পর কিছু কিছু স্পিডবোট ফেরির সঙ্গে ভিড়িয়ে যাত্রীদের তুলে নিচ্ছে। সেক্ষেত্রে ২৫০ টাকা করে ভাড়া নিচ্ছে তারা।
এছাড়া লঞ্চ ও ফেরিঘাটের মাঝামাঝি স্থান থেকে কিছু স্পিডবোট যাত্রী পারাপার করছে। সেক্ষেত্রে ভাড়া নেয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা করে। স্বাভাবিক সময়ে এই ভাড়ার পরিমাণ ছিল ১৫০ টাকা।
যাত্রীদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা জানান, তাড়াতাড়ি ঢাকা যেতে হবে। এজন্য বেশি টাকা দিয়ে স্পিডবোটে পার হচ্ছেন।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে আসা যাত্রী সাকাম মিয়া বলেন, ‘ফেরিতে যাত্রীদের চাপ অনেক। প্রচুর ভিড়। দাঁড়িয়ে থাকতে হবে রোদের মধ্যে পুরো পথ। তাই ফেরি বাদ দিয়ে স্পিডবোটে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে দ্রুত পৌঁছানো যাবে আবার রোদে পুড়তে হবে না।’
মো. রাকিব নামের এক যাত্রী বলেন, ‘ফেরিতে স্বাস্থ্যবিধি মানার সুযোগ নাই। গায়ের সঙ্গে গা লাগিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। সেক্ষেত্রে স্পিডবোটে কিছুটা স্বস্তি আছে। তবে নিষেধ থাকায় কিছু কিছু স্পিডবোট বাড়তি ভাড়া নিয়ে ঘাটের বাইরে গিয়ে যাত্রী পার করছে।’
বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, লঞ্চের পাশাপাশি স্পিডবোট চলাচলও নিষেধ। তবে বাংলাবাজার ঘাটের এবং শিমুলিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে আসা কিছু স্পিডবোট যাত্রী পারাপার করছে। যদিও স্পিডবোট ঘাট থেকে না নিয়ে পাশেই নদীর পাড় থেকে যাত্রী উঠাচ্ছে তারা। কিছু বোট আবার ফেরির সঙ্গে ঠেকিয়ে যাত্রী উঠাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘাটের এক ব্যক্তি বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে যারা প্রভাবশালী তাদের বোটগুলোই যাত্রীদের পারাপার করছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এ সব স্পিডবোট যাত্রী পারাপার করে থাকে। ভাড়াও আদায় করে দ্বিগুণ।
এ বিষয়ে কাঁঠালবাড়ী নৌপুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘ঘাটে যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ রয়েছে। এরই মধ্যে কিছু কিছু স্পিডবোট ঘাটের বিভিন্ন স্থান থেকে যাত্রী পারাপার করছে। আমরা সেখানে গেলেই আবার দ্রুত ওই স্থান ত্যাগ করে তারা। তবে আমরা চেষ্টা করছি যাতে অবৈধভাবে স্পিডবোট যাত্রী পার না করতে পারে।’
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘নিষেধ থাকার পরও কিছু কিছু স্পিডবোট যাত্রী পারাপার করছে বলে জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে নৌপুলিশকে জানানো হয়েছে। তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।’
একেএম নাসির হক/এসজে/এমএস