লকডাউনে প্রসূতিকে নিজের রান্না করা খাবার খাওয়ালেন ইউএনও
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারঘোষিত আটদিনের লকডাউন বা বিধিনিষেধের প্রথমদিনে শরীয়তপুরে কঠোর নজরদারি রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন। শহরের মোড়ে মোড়ে টহল দিচ্ছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
এ কারণে জেলা শহরে কোনো হোটেল বা রেস্টুরেন্ট খোলা নেই। ফলে এক প্রসূতির জন্য খাবার ব্যবস্থা করত পারছিলেন না তার স্বামী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে বিষয়টি দেখে ওই প্রসূতির মায়ের জন্য নিজের হাতে রান্না করা খাবার নিয়ে আসেন শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনদীপ ঘরাই।
মো. ইউনুস শাহীন নামের এক স্কুল শিক্ষক মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে শরীয়তপুরের শহরের নিপুন ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড ক্লিনিকে তার স্ত্রীকে ভর্তি করেন। রাত ১২টার দিকে তার স্ত্রীর সিজারে সন্তান প্রসব করেন। কিন্তু বুধবার (১৪ এপ্রিল) সকাল থেকে লকডাউন হওয়ায় শহরের হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বন্ধ থাকে। তাই তার স্ত্রী ভাত খেতে চাইলেও খাওয়ার ব্যবস্থা করত পারেননি।
জাগোনিউজ২৪.কম-এর শরীয়তপুর প্রতিনিধির এক ফেসবুকে লাইভে এ অসহায়ের কথা জানাচ্ছিলেন মো. ইউনুস শাহীন। বিষয়টি নজরে আসে শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার। নিজ হাতে বাসায় রান্না করা খাবার ওই প্রসূতির জন্য নিয়ে আসেন তিনি।
মো. ইউনুস শাহীন বরগুনা সদর উপজেলার রায়ভগ গ্রামের বাসিন্দা। তিনি জাজিরা উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়নে অবস্থিত বিলাশপুর কুদ্দুস ব্যাপারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক। সেই সুবাদে ২০১৮ সাল থেকে স্ত্রী নিয়ে জাজিরা বিলাশপুর এলাকায় থাকেন ইউনুস।
ইউএনও মনদীপ ঘরাই বলেন, ‘লকডাউন চলছে। এ সময় হোটেল, রেস্টুরেন্টসহ সবকিছুই বন্ধ রয়েছে। লাইভে দেখলাম প্রসূতি মা সারাদিন ভাত খাননি। তাই নিজ থেকেই খাবার নিয়ে ক্লিনিকে চলে এলাম। লকডাউনের কারণে আজ আমি বাসায় নিজেই রান্না করেছি।’
ইউএনও আরও বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি সঙ্কটের মুখে পড়েছেন খেটে খাওয়া ও অসহায় মানুষগুলো। সরকার সবসময় খাদ্য সহযোগিতা দিয়ে থাকেন। সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসা প্রয়োজন।’
মো. ছগির হোসেন/এসজে/এআরএ