অচল পড়ে আছে রামেকের পিসিআর মেশিন
দুই মাস ধরে বন্ধ রয়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পিসিআর মেশিন। গত বছর করোনাকালে এই ল্যাবটিতে এক ব্যাচে ৯৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হতো। অথচ কর্তৃপক্ষের অনীহার কারণে দুই মাস ধরে অচল পড়ে আছে ল্যাবটি।
এ মেশিন দুইবার চালালে একদিনেই পাওয়া যায় ১৮৮টি রিপোর্ট। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, পর্যাপ্ত লোকবলের অভাবে বন্ধ রয়েছে ল্যাব।
রামেক সূত্রে জানা যায়, রাজশাহীতে গত বছর করোনার প্রকোপ বেড়ে গেলে ১৯ মে ল্যাবটি প্রথম চালু করা হয়। সর্বশেষ ৮ ফেব্রুয়ারি এ ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তারপর থেকে ল্যাবটি বন্ধ আছে।
এদিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবটিতে এখন চার শিফটে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। হাসপাতালের ল্যাবটি বন্ধ থাকায় কলেজ ল্যাবে নমুনা জট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, করোনার প্রকোপ কমে এলে গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ল্যাবটিতে নমুনা পরীক্ষা বন্ধ করা হয়। হাসপাতালের যেসব কর্মীদের এনে ল্যাবটি চালানো হচ্ছিল তাদের নিজ নিজ জায়গায় ফেরত পাঠানো হয়।
তবে রাজশাহীতে এখন সংক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেলেও ল্যাবটি চালুর উদ্যোগ নেয়নি রামেক কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে রাজশাহী ছাড়াও পার্শ্ববর্তী তিনটি জেলার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। প্রতিদিনই এখানে নমুনার সংখ্যা বাড়ছে। ফলে দিনের পরীক্ষা দিনে করা যাচ্ছে না।
নমুনা জট শুরু হয়েছে। বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে।
কলেজ ল্যাবে কর্মরত ব্যক্তিরা বলছেন, বর্তমানে কলেজ ল্যাবের দু’টি পিসিআর মেশিনে চার ব্যাচে হচ্ছে ৩৭৬টি নমুনা পরীক্ষা। এছাড়াও করোনা পরীক্ষা বেড়ে যাওয়ায় এখানে কর্মরত টেকনোলজিস্ট ও চিকিৎসকদের চাপ বেড়ে গেছে।
তারা আরও জানান, হাসপাতালের ল্যাবটি চালু হলে সেখানে দুই ব্যাচে ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা প্রতিদিন করা যাবে। এতে নমুনা পরীক্ষা যেমন বাড়বে, আবার চাপও কমবে।
রামেকের অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী বলেন, আমাদের যে জনবল রয়েছে তাতে দুই শিফটে কাজ করা সম্ভব। বর্তমানে নমুনার চাপ বেড়ে যাওয়ায় চার শিফটে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছি। তবে চার শিফট কাজ করার পরও উদ্বৃত্ত থেকে যাচ্ছে ৩০০ নমুনা। তাই হাসপাতালের ল্যাবটিও চালু করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
রামেক হাসপাতালের মলিকুলার বায়োলজি ল্যাবের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও বিভাগীয় ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবের বৈজ্ঞানিক এস এম হাসান এ লতিফ বলেন, হাসপাতালের ল্যাবটি যেকোনো সময় চালু করা যেতে পারে। ফেব্রুয়ারিতে নমুনা কমে যাওয়ায় এটি বন্ধ রাখা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, এ মুহূর্তে জরুরিভাবে চারজন চিকিৎসক এবং চারজন মলিকুলার বায়োলজিস্ট দরকার। এর বাইরে ১২ জন টেকনোলজিস্টও প্রয়োজন। জনবল চাহিদা মিটলেই ল্যাব চালু করা সম্ভব।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শামিম ইয়াজদানি বলেন, ল্যাবটি স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে চলছিল। তারা ফেব্রুয়ারিতে চলে গেছে। এজন্য ল্যাব চালু করতে যে লোক দরকার তা তাদের নেই। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগে চিঠি দিয়েছি। তারা লোকবল দিলেই এটি চালু করা যাবে।
ফয়সাল আহমেদ/এসএমএম/এমএস